ভোক্তাকন্ঠ প্রতিবেদক: করোনা মহামারীতে চরম সংকটাপন্ন অবস্থায় দেশের অর্থনীতি। বাস্তব এই সংকটাবস্থায় রপ্তানিমুখী কিছু কিছু শিল্প কারখানা চালু করা জরুরি। এছাড়া আসন্ন রোজা ও দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গার্মেন্টস মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করার পরার্মশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গার্মেন্ট কারখানা চালুর খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গাজীপুর জেলা প্রশাসন। এ জেলার করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় গার্মেন্ট শিল্প চালুকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছেন জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার। তবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কিছু কিছু গার্মেন্ট কারখানার পণ্য রপ্তানির জন্য খোলা রাখতে হবে। এটাও ঠিক সামনে রোজা সবাইকে একেবারে বন্ধ করে রাখতে পারবো না। আস্তে আস্তে কিছু কিছু জায়গায় উন্মুক্ত করতে হবে।
আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী ঢাকা বিভাগের চারটি এবং ময়মনসিংহ বিভাগের সব জেলা প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করেন। এসময় জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার গার্মেন্টস চালু নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানান।
গার্মেন্ট শিল্প চালু প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা সত্য যে কিছু কিছু শিল্প আছে যাদের পণ্য রপ্তানি হবে। এজন্য আমাদের লক্ষ্য আছে কিছু কিছু খোলা রাখা। আর কিছু কিছু চালু করতেই হবে। বিশেষ করে আমাদের ওষুধ শিল্প, অ্যাপ্রোন থেকে শুরু করে, হেড ক্যাপ, সু ক্যাপ এগুলো যারা তৈরি করছে তাদের জন্য খোলা রাখতেই হচ্ছে।’
জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব মালিকেরা কারখানা খুলতে চান, তারা স্বাস্থ্য নির্দেশিকা মেনে কীভাবে শ্রমিকদের সুরক্ষা দেবেন তা আলোচনা করে ঠিক করতে পারেন। কারখানার মধ্যে কোনও ফাঁকা জায়গা থাকে সেখানে যদি তাদের থাকার ব্যবস্থা করা যায়। যেখানে তারা সম্পূর্ণভাবে সুরক্ষিত হবে। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব জায়গা যেখানে আছে তারাও সেখানে সেই ব্যবস্থা করতে পারে।
প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, গার্মেন্ট শ্রমিকদের কত পার্সেন্ট আসতে চায় তা নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। তাদের আনতে হলে আনার ও থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। তারা যেন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় থাকতে পারে। তাহলে তারা এটা চালু করতে পারবে। এই জিনিসটা আপনাদের দেখা উচিত এবং সেভাবে আলোচনা করা উচিত। এটাও ঠিক সামনে রোজা সবাইকে একেবারে বন্ধ করে রাখতে পারব না। আস্তে আস্তে কিছু কিছু জায়গায় উন্মুক্ত করতে হবে।
গাজীপুরে করোনা প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গাজীপুরে এই রোগের প্রাদুর্ভাবটা খুব বেশি দেখা দিচ্ছে। আপনাদের চিন্তা করতে হবে ২৪ বা ২৫ তারিখে চালু করা ঠিক হবে কিনা। এটা বুঝে নিয়েই শিল্প খোলার কথা বা সুরক্ষার কথা ভাবতে হবে। তবে বলবো না যে একদম বন্ধ থাকুক সীমিত আকারে সেই পরিমাণ শ্রমিক আসতে হবে। তারা সেভাবে চালু করতে পারবে। মালিকদের সঙ্গে কথা বলে এটা ঠিক করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবো। এরপরে আমরা গার্মেন্ট মালিকদের সঙ্গে বসবো এবং সে বিষয়ে আমি কথা বলবো।’
আগেরবার হঠাৎ করে শ্রমিক আনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতবার হঠাৎ সুপারভাইজারদের দিয়ে শ্রমিকদের নিয়ে আসলো। পরের দিনই বলেছিল চলে যাও- এটা ঠিক হয়নি। এই আসা-যাওয়ায় শ্রমিকরা যে কষ্টটা পেয়েছে। যোগাযোগের সব বন্ধ, মাইলের পর মাইল হেঁটে হেঁটে এই মেয়েরা পৌঁছাইছে। এভাবে যেন আর তাদের বিড়ম্বনায় না পড়তে হয়।’