অনলাইন ডেস্ক: রমজান মাস শুরুর আগেই ব্যাপকভাবে বাড়তে শুরু করেছে ডাল, পেঁয়াজ, রসুন ও আদার দাম। আগে থেকেই বাড়তি অন্যান্য পণ্যের দামও।
বাজারে অন্তত চারটি পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। এ ছাড়া সব অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দামই বাড়তি। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব পণ্যের আমদানি মূল্য খুব একটা বাড়েনি। স্থানীয় উৎপাদনও স্বাভাবিক। তা সত্ত্বেও দেশে দাম বাড়ছে বেশি হারে। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।
ট্যারিফ কমিশন পণ্যের উৎপাদন, সর্বশেষ তিন মাসের আমদানি ও আন্তর্জাতিক বাজারমূল্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যা দেওয়া হয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে। এতে বলা হয়, দাম বাড়ার বড় কারণ সরবরাহ ব্যবস্থার সমস্যা। কৃষকের কাছ থেকে পণ্য ভোক্তার কাছে স্বাভাবিক সময়ের মতো পৌঁছাতে পারছে না। আবার বন্দরেও পণ্য ওঠানো-নামানো বিঘ্নিত হচ্ছে।
ট্যারিফ কমিশন যে চার পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কথা বলছে, তা হলো মসুর ডাল, পেঁয়াজ, রসুন ও আদা। কমিশনের গত শনিবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, এক মাসে মোটা দানার মসুর ডালের দাম ১৯, মাঝারি দানা ১৩ ও সরু দানার দাম ২৮ শতাংশ বেড়েছে। ছোলার দাম বেড়েছে প্রায় ১১ শতাংশ। দেশি পেঁয়াজের দাম ২৯ শতাংশ, দেশি রসুন ৬৪ শতাংশ ও আদার দাম ৮৯ থেকে ৯৬ শতাংশ বেড়েছে।
বাজারে চালের দাম ব্যাপক চড়া। ভোজ্যতেল ও চিনির দামও বেশি। শুকনা মরিচের কেজি ২২০ টাকায় নেমেছিল। সেটা আবার বেড়ে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা হয়েছে। দাম কম কেবল সবজি, ডিম ও ব্রয়লার মুরগির। অবশ্য গরুর মাংসের কেজি ৬০০ টাকা। দেশি মুরগির কেজিও ৫৮০ টাকা।
ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব পণ্যের দাম বেশি বেড়েছে, সেগুলোর আমদানিও বেশি হয়েছে। যেমন গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মসুর ডাল আমদানি হয়েছে ৫৭ হাজার টন। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ২৪ হাজার টন বেশি। ছোলা আমদানি হয়েছে ৫২ হাজার টন, বাড়তি ৮ হাজার টন।
তিন মাসে মসুর ডালের গড় আমদানি মূল্য টনপ্রতি ১০ শতাংশ বেড়ে ৫৪৬ ডলার হয়েছে। অথচ দেশে বেড়েছে অনেক বেশি হারে।
তিন মাসে রসুন আমদানি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আগের বছরের ১৩ হাজার টনের জায়গায় এবার আমদানি হয়েছে ২২ হাজার টন। তিন মাসে গড় আমদানি মূল্য টনপ্রতি মাত্র ৩৯ ডলার বেড়ে ১ হাজার ২৪০ ডলার হয়েছে। আদার দাম বাড়েনি। টনপ্রতি গড় আমদানি মূল্য পড়ছে ৮৫৯ ডলার। আমদানি বেড়ে ২৬ হাজার টন থেকে ৩০ হাজার টন হয়েছে। কিন্তু দেশে এসব পণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে।
দেশে পেঁয়াজের আমদানি নেই। এখন ভরা মৌসুম। তারপরও এক মাস আগে যে পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকা ছিল, তা এখন ৬০ থেকে ৬৫ টাকা।