রমজানে বিশেষ টিম নিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে ভোক্তা অধিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আসন্ন রমজান মাসকে সামনে রেখে বাজার নিয়ন্ত্রণে বিশেষ টিম নিয়ে মাঠে থাকবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আগামী মার্চ থেকে শুরু হয়ে পুরো রমজান মাসজুড়ে এই টিম বাজার তদারকির কাজ করবে।

মঙ্গলবার ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন বাজার (পাইকারি ও খুচরা) সমিতির নেতাদের সঙ্গে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।

মতবিনিময় সভায় রাজধানীর ঢাকার বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন- ভোক্তা অধিকারের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) (ভারপ্রাপ্ত) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, উপ-পরিচালক আতিয়া সুলতানা, উপ-পরিচালক আফরোজা রহমান, উপ-পরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস।

ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান বলেন, আগামী রকজান মাসকে সামনে রেখে বাজার তদারকিতে ঢাকা সিটির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে চারটি, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে ৬টি টিম থাকবে। এছাড়া ৬৪ জেলায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অফিসাররা আছেন, তারাও থাকবেন।

রোজায় বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বেড়ে যায় জানিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, আমাদের মজুত পরিস্থিতি সন্তোষজনক অবস্থায় আছে। সরকারের পক্ষ থেকে তেলের যে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তা ঈদের দিন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

তিনি বলেন, তেলের এলসি গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি খোলা আছে। রোজায় অনেক ক্ষেত্রে আমাদের কনজাম্পশন ডাবল হয়ে যায়। প্রতি মাসে যেখানে ২ লাখ মেট্রিক টন তেলের কনজাম্পশন, সেখানে রোজায় হয়ে যায় ৩ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ প্রায় ডাবল হয়ে যায়। একইভাবে মশুর ডাল, চিনিরও প্রায় ডাবল হয়ে যায়। সে অনুযায়ী আমাদের মজুত পরিস্থিতি যথেষ্ট সন্তোষজনক।

সফিকুজ্জামান বলেন, আমাদের পরিবহন সেক্টরে বড় ধরনের ব্যত্যয় আছে। পথে পথে যে স্লিপ দেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে কনসার্ন যারা আছেন, জননিরাপত্তাসহ আমাদের পরিবহন সেক্টরের যারা আছেন, তাদের নিয়ে একটা মিটিং করবো। পণ্যের দাম যাতে না বাড়ে এ জন্য আমাদের এই প্রস্তুতি।

তিনি বলেন, গাবতলী পর্যন্ত পণ্যের এক দাম। গাবতলী থেকে ফার্মগেট আসতে আসতে আরও দাম বেড়ে যায়। ফার্মগেট থেকে কারওয়ান বাজারে ট্রাক ঢুকতে গিয়ে দাম আরও বেড়ে যায়। ট্রাকের লাইনে আরও বেড়ে যায়। এরপর আপনারা তো দেখেছেন কোন পর্যায়ে যায়। সেখানে আমাদের কাজ করার আছে।

তিনি আরও বলেন, কোনো ব্যবসায়ী কারচুপি করছে এ ধরনের তথ্য আমরা পেলে অবশ্যই কঠোর অবস্থানে থাকবো। আমরা চাই, এবারের রোজায় আমাদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব, আমরা চেষ্টা করে যাব।

তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকারের আইন দিয়ে ভোক্তার যত দিকে স্বার্থ আছে সব দিকেই আমরা যেতে চাই। আমরা সার্ভিস সেক্টরগুলো নিয়েও কাজ করবো। বিশেষ করে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাত নিয়েও কাজ করবো। এসব খাতে ভোক্তারা নিয়মিত প্রতারিত হচ্ছে। এছাড়া অনলাইনে ব্যবসায় প্রতিরিত হবার ঘটনাও কম নয়। অনলাইনে প্রতারিত হওয়া সমাধানে ভোক্তা অধিকারের আইন সংশোধনেও কাজ করা হচ্ছে।

এসময় মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ক্রয় ভাউচার থাকতেই হবে। ক্রয় ভাউচার না থাকা আইন অনুযায়ী একটা বড় অপরাধ। রোজার ঈদ পর্যন্ত এই ক্ষেত্রে আমরা কোনো ছাড় দেবো না। ঢাকার মৌলভীবাজার এবং চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ- এ দুই বাজার এবং যারা বড় ব্যবসায়ী আছেন, আমদানিকারক, তারা যদি ঠিক থাকেন তাহলে বাংলাদেশের মানুষ কষ্ট পাওয়ার কথা না।

ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, পণ্যের দাম বাড়ার পিছনে ক্রেতাদের সচেতনতার অভাব রয়েছে। অনেক সময় ক্রেতারা চাহিদার থেকে অধিক মজুদ করে রাখে। এতে বাজারে সংকট দেখা দেয়। এ বিষয়ে ক্রেতাদের সচেতন হতে হবে। এছাড়া পাইকারী ব্যবসায়ী এবং ইম্পোটার যারা আছে তারা যেন সহজেই পণ্য আনতে পারে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

আরইউ