।। নিজস্ব প্রতিবেদক ।।
ভোক্তা অধিকার রক্ষায় বাজারে তদারকি অভিযান চালিয়ে ছয়টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। অভিযান চলাকালে প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায় ৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। গত ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ অধিদপ্তরের চার জন কর্মকর্তার নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয় রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড সংলগ্ন এলাকায়।
জরিমানাকৃত ছয় প্রতিষ্ঠানের একটির অবস্থান এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যালে। দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘আবেদা নূর ফাউন্ডেশনে’র এই ভোজ্যতেলের কারখানায় অভিযান চালিয়ে দেখা যায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তেল বানানো হচ্ছে। সরিষা উৎপাদনের জন্য বিএসটিআই-এর অনুমোদন নিয়ে তার সঙ্গে ভাঙ্গানো হচ্ছে বিএসটিআইঅনুমোদিনবিহীন তিলের তেল এবং কালোজিরার তেল। এমনকি ব্যাবহার করা হচ্ছে না পণ্যের মোড়কও। ট্রাস্টের কথা বলে, এতিমদের সহযোগিতা কথা বলে উচ্চমূল্যে তেল বিক্রি করে আসছে এ ভোজ্যতেলের কারখানা। এসব অপরাধের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযুক্ত আরেকটি প্রতিষ্ঠান দেশের সুনামধন্য বেকারী ‘ওয়েলফুড’। বাজার তদারকি অভিযান চালিয়ে অনিয়মের ছাপ পাওয়া গেছে প্রতিষ্ঠানটির বিপণনে। চকবাজারের সস্তা স্প্রে বিক্রি করা হচ্ছে বেশি মূল্যে, বিদেশী জুসে নেই কোন আমদানিকারকের স্টিকার। দোকানে রাখা ফ্রিজে খাবার রাখার ক্ষেত্রে দেখা মিলেছে অব্যবস্থাপনার। এসব অপরাধের ভিত্তিতে ওয়েলফুডকে জরিমানা করা হয় ৫০ হাজার টাকা।
এছাড়াও দুটি ফার্মেসি, একটি রেস্টুরেন্ট ও একটি চেইন শপ তদারকি করে পাওয়া যায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ, বিদেশি ওষুধে আমদানিকারকের স্টিকার না থাকা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য পণ্য তৈরি, খাদ্য পণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্যের মিশ্রণ, পণ্যের মোড়কে এমআরপি লেখা না থাকা ও পণ্যের মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করার অপরাধ।
ভোক্তার অধিকার রক্ষায় অঙ্গীকারাবদ্ধ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এদিনের বাজার তদারকি অভিযানের সঙ্গী হন ‘ভোক্তা অভিযোগ কেন্দ্রে’র স্বেচ্ছাসেবী কর্মী আফসানা আক্তার। তিনি জানান, ‘আমি নিঃসন্দেহ বলতে পারি, দিনের পর দিন জনসাধারণকে প্রতারিত করার সময় যেন ঘনিয়ে আসছে। এভাবে নিয়মিত ও আরও বৃহৎ পরিসরে অভিযান চলতে থাকলে ভোক্তা অধিকার রক্ষা কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। কিন্তু বাংলাদেশকে নকল ও ভেজালমুক্ত করার এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে সাধারন জনগণকেও। কোনো কিছু কিনে প্রতারিত হলে অবশ্যই অভিযোগ জানাতে হবে। তাহলে ভোক্তা অধিকার রক্ষা ও অপরধীদের শাস্তি দেয়া সহজ হবে।’