ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে ঝুলে আছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জলবিদ্যুৎ উৎপাদন। ভারত-মিয়ানমার-নেপাল-ভুটানে প্রায় দেড় লাখ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উপাদনের সম্ভাবনা থাকলেও দেশগুলো তা ব্যবহারে উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়। নেপালের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকও সই হয়। চুক্তি চূড়ান্ত হলেও ভারতের সম্মতি না পাওয়ায় সেটা ঝুলে আছে। অন্যদিকে ভুটানের সঙ্গে আলোচনা অনেকটা এগোলেও সমঝোতা স্মারক সই হয়নি। বলা হচ্ছে কেন্দ্র নির্মাণ হলেও বিদ্যুৎ আনতে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহারে দেশটির কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের অনুমোদন লাগবে।
এর আগে ভারত এ ধরনের প্রকল্প করার ক্ষেত্রে তাদের দেশের কোম্পানি বা সরকারের অংশিদারিত্ব থাকার বাধ্যবাধকতা রেখে আইন করে। আইনটি সংশোধন হলেও ভূখণ্ড ব্যবহারে সম্মতির জন্য তাদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ বিষয়ক সার্ক টেকনিক্যাল কমিটির সাবেক সদস্য বি. ডি রহমতুল্লাহ বলেন, ‘এ কাজ সম্পন্ন করতে সবার রাজনৈতিক কমিটমেন্ট থাকতে হবে। আমাদের অনেক নদী মরে যাচ্ছে। প্রবাহ কমছে ভারতেও। সরকারের উচিত প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা। ভারত, বাংলাদেশ ও নেপালে জলবিদ্যুতের সম্ভাবনা অনেক। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত না এলে এ সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাবে না।’
ভারত অরুনাচল প্রদেশে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করে বাংলাদেশর ওপর দিয়ে সেই বিদ্যুৎ দেশের নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সহযোগিতা যৌথ কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও হয়। সেই অনুযায়ী প্রকল্প গ্রহণের জন্য কয়েকটি রুটও ঠিক হয়। তবে করোনা পরিস্থিতিতে সেটা ঝুলে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নেপাল ও ভুটানে ৬০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। এর বাইরে মিয়ানমারে ৫০ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন হতে পারে। এ ছাড়া ভারতের বিভিন্ন প্রদেশেও প্রায় ৫০ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। তবে সম্ভাব্যতা যাচাই করার আগে এই হিসাবকে চূড়ান্ত বিবেচনা করা হচ্ছে না।
সরকার নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিদ্যুৎ বিভাগের ক্রয় সংক্রান্ত এক প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদনও করেন। কিন্তু পরে তা আর এগোয়নি।