রাজধানীর হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিনলাইন পরিবহনের একটি বাসের চাপায় পা হারান প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকার। এরপর আদালতের নির্দেশ মোতাবেক তাকে চিকিৎসাসহ ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছে গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য জানিয়েছেন রাসেল সরকারের আইনজীবী খন্দকার শামসুল হক রেজা।
গত বছরের ১ অক্টোবর এ বিষয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে তিন মাসের মধ্যে ২০ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে চার কিস্তিতে এ টাকা শোধ করে গ্রিনলাইন পরিবহন।
আইনজীবীদের তথ্য মতে, এর আগে চিকিৎসাবাবদ ৩ লাখ ৪০ হাজার এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ লাখ টাকা রাসেল সরকারকে দেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিন লাইন পরিবহনের ধাক্কায় প্রাইভেটকারচালক রাসেল সরকারের (২৩) বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও গাইবান্ধা থেকে নির্বাচিত সরকার দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি উচ্চ আদালতে (হাইকোর্ট) রিট আবেদন করেন। সেই রিট আবেদন আমলে নিয়ে হাইকোর্ট ওই বছরের ১৪ মে রুল জারি করেন। রুলে কেন রাসেলকে এককোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
পরে এক আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। আদেশে প্রতি মাসে ৫ লাখ টাকা করে দিতে বলা হয়। এই নির্দেশের পর চিকিৎসাসহ প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ টাকা দেয় গ্রিনলাইন কর্তৃপক্ষ।
পরে গ্রিনলাইনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর রাসেল সরকারকে টাকা (পরিশোধের অর্থ বাদ যাবে) দেওয়ার আদেশ স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। তবে পরিশোধের অর্থ বাদ দেওয়ার পর বাকি যা থাকবে তার ওপর হাইকোর্টের রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ স্থগিতাদেশ থাকবে। এরপর হাইকোর্টে রুল শুনানি শুরু হয়।
গত বছরের ৫ মার্চ শুনানি শেষে হাইকোর্ট রায়ের জন্য ১৫ এপ্রিল দিন ঠিক করেছিলেন। এর মধ্যে করোনা মহামারি হিসেবে ছড়িয়ে পড়ায় আদালত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া বেঞ্চটিও পুনর্গঠন করা হয়। পরে রায়ের জন্য এটি উক্ত বেঞ্চের কার্যতালিকায় আসে। এরপর আদালত গত বছরের ০১ অক্টোবর রায়ের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন। সে অনুসারে রায় হয়।
আইনজীবী খোন্দকার শামসুল হক রেজা জানান, আমরা মোট ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছি। আর চিকিৎসাবাবদ ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা। যেহেতু এ অর্থ আদালতের আদেশ অনুসারে পেয়েছি, তাই এটি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।