।। ভোক্তা অধিকার ডেস্ক ।।
ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় অভিনব এক উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। কোনো রেস্তোরাঁর সামনে গেলেই দেখা যাবে সবুজ কিংবা কমলা রঙের চিহ্ন। সবুজ চিহ্নের অর্থ হবে সেই রেস্তোরাঁটি নিরাপদ। আর কমলা রঙের স্টিকার দেখলে বুঝতে হবে সেটির খাবার অনিরাপদ। নিরাপদ খাবারের হোটেলগুলোর মধ্যেও থাকবে গ্রেডিং।
‘এ+’, ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ এই চার ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ঢাকা মহানগরীর সব হোটেল ও রেস্তোরাঁকে। এখন থেকে ঢাকা মহানগরীর সব হোটেল ও রেস্তোরাঁকে এভাবে গ্রেডিং পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হবে। খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার ২০ জানুয়ারি ২০১৯ রোববার রাজধানীর পল্টনের ফারস হোটেলে এই গ্রেডিং কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
খাবারের মান, বিশুদ্ধতা, পরিবেশ, ডেকোরেশন, মনিটরে রান্নাঘরের পরিবেশ দেখা যাওয়ার ব্যবস্থা ও ওয়েটারদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ভিত্তিতে রেস্তোরাঁগুলোকে নম্বর দেয়া হবে। কোনো রেস্তোরাঁ ৯০-এর বেশি নম্বর পেলে ‘এ+’ অর্থাৎ সবুজ রঙের স্টিকার পাবে। এ ধরনের রেস্তোরাঁ বা হোটেল ‘উত্তম’, নির্ভয়ে খাওয়া যাবে।
নম্বর যদি ৮০-এর ঊর্ধ্বে হয় তাহলে রেস্তোরাঁটি ‘এ’ ক্যাটাগরি অর্থাৎ নীল রঙের স্টিকার পাবে। এ ধরনের রেস্তোরাঁ বা হোটেল ‘ভালো’। নম্বর ৫৫ থেকে ৭৯ পর্যন্ত হলে ‘বি’ ক্যাটাগরি অর্থাৎ হলুদ রঙের স্টিকার মিলবে। এ ধরনের রেস্তোরাঁ বা হোটেল ‘গড়পড়তা ভালো’। হলুদ রঙের স্টিকারধারী রেস্তোরাঁকে আপাতত তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হবে তাদের মান ও গ্রেড উন্নতির জন্য। তিন মাস পরেও মানের উন্নতি না হলে লাইসেন্স বাতিল হবে।
আর নম্বর যদি হয় ৪৫ থেকে ৫৫, তাহলে মিলবে ‘সি’ ক্যাটাগরির কমলা রঙের স্টিকার। এ ধরনের রেস্তোরাঁ বা হোটেলের গ্রেড পেন্ডিং থাকবে। এক মাসের মধ্যে রেস্তোরাঁর মান ভালো না করলে তাদের লাইসেন্স বাতিল হবে।
ভোক্তা বা গ্রাহকরা রেস্তোরাঁয় প্রবেশের সময় স্টিকার দেখেই ভেতরের পরিবেশ পরিস্থিতি, কিচেনের অভ্যন্তরের কী ধরনের দূষণ বা কতটা স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন। প্রাথমিকভাবে রাজধানীর মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন ও সচিবালয় এলাকায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে এই উদ্যোগ চালু করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী সাধনচন্দ্র মজুমদার বলেন, অনেকে এসএসসি-এইচএসসিতে ‘এ’ প্লাস পেয়ে থাকে। কিন্তু তারা কি সেটা শেষপর্যন্ত ধরে রাখতে পারে? ছোটকালে কেউ চিন্তা করে ডাক্তার হবে, কেউ ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু বড় হয়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যায়। তেমনি আপনাদের যারা ‘এ+’ প্লাস ও ‘এ’ গ্রেড পেলেন আমরা আশা করি, সরকারের দেয়া এই স্বীকৃতিটুকু ধরে রাখবেন। রেস্তোরাঁর ভালো মান বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, আপনাদের এই স্বীকৃতি সরকারি স্বীকৃতি। এই স্বীকৃতি পাওয়ার ফলে আপনাদের ব্যবসা ও লাভ আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়ে যাবে। আশাকরি আপনারা সঠিকভাবে ব্যবসা করবেন।
এ সময় তিনি বলেন, ভালো গ্রেডপ্রাপ্তদের মধ্যে পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ রেস্তোরাঁর মান যে কমবে না এটা কেউ গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারবে না। তাই আমি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত মনিটরিংয়ের অনুরোধ জানাচ্ছি।