নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজার উপকূলের চাষিরা লবণের ন্যায্যমূল্য আদায়ে উৎপাদন বন্ধ রেখে আন্দোলনে নেমেছেন। গত কয়েক দিনে কক্সবাজার, কুতুবদিয়ায়া, চকরিয়া, টেকনাফ ও মহেশখালীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন চাষিরা। লবণ নিয়ে তারা সাত দফা দাবি জানিয়েছেন।
লবণচাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৫০ কেজি লবণের উৎপাদন খরচ প্রায় ২৫০ টাকা হলেও বাজারে দর মিলছে ১৮০ টাকা। যার ফলে মণে লোকসান ৭০ টাকার মতো।
উপকূলে লবণ উৎপাদনে জড়িত চাষী প্রায় ৪৫ হাজার। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী লবণ উৎপাদন হলেও আশানুরূপ দাম না পাওয়ায় হতাশ চাষীরা।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) তথ্য অনুযায়ী, এই মৌসুমে জেলার আটটি উপজেলায় ৬০ হাজার ৫৫৯ একর জমি লবণ উৎপাদনের আওতায় এসেছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ১৮ লাখ মেট্রিক টন, যা বার্ষিক জাতীয় চাহিদার সমান। আর ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত লবণ উৎপাদিত হয়েছে ৩৯ হাজার টনের কিছু বেশি। গত মৌসুমের একই সময় উৎপাদিত হয়েছিল ৯৭ হাজার টন।
উপকূল জুড়ে প্রচুর লবণ মাঠে পড়ে থাকতে দেখা যায়। মাঠের লবণ ১৮০ টাকা মণ দরে বিক্রি হতে দেখা যায় কোথাও যা চাষীদের উৎপাদন ব্যয়ের চেয়ে অনেক কম।
চাষিরা লবণ নিয়ে সরকারের নিকট সাত দফা দাবি জানিয়েছেন। এ নিয়ে তাঁরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপিও দিয়েছেন।
এক চাষি বলেন, চাষিদের লবণের কেজি ৪ টাকা আর বাজারে তা ঠিকই ২০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব দেখার যেন কেউ নেই।
লবণ চাষিদের সাত দফাঃ
* মাঠপর্যায়ে লবণের মূল্য প্রতি কেজি ১০-১২ টাকা নির্ধারণ
* লবণ আমদানি নিষিদ্ধ করা
* মানবদেহের ক্ষতিকর সোডিয়াম সালফেট ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্ট আমদানি নিয়ন্ত্রণ
* সহজ শর্তে লবণচাষিদের ঋণ প্রদান
* ২ লাখ টন লবণ মজুত
* প্রান্তিক চাষিদের ঋণ মওকুফ এবং
* প্রণোদনা প্রদান।
চাষিদের সুরক্ষা দিতে দেশে ভোজ্যলবণ আমদানি নিষিদ্ধ হলেও ভোজ্যলবণ আমদানি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে এদিকে সরাসরি মাঠ থেকে ১ লাখ টন অপরিশোধিত লবণ কেনার জন্য বিসিক মন্ত্রণালয়ের কাছে অর্থ চেয়েছে বলে জানান বিসিক।