নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ
শহরবাসীকে ওয়্সার পানি ফুটিয়ে পান করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসনিম এ খান।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হল মিলনায়তনে ‘নগরবাসীর চাহিদা-ঢাকা ওয়াসার সক্ষমতা’ শীর্ষক ডুরা সংলাপে উপস্থিত হয়ে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসব একথা বলেন।
ওয়াসার সক্ষমতা তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন ঢাকা শহরে পানির চাহিদা ২শ’ ৬০ কোটি থেকে ২শ’ ৬৫ কোটি লিটার, অথচ আমাদের পানি উৎপাদনের সক্ষমতা ২শ’ ২৭০-২৭৫ কোটি লিটার।
ঢাকা ইউটিলিটি রিপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মো. রুহুল আমিন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‘নগরবাসীর চাহিদা-ঢাকা ওয়াসার সক্ষমতা’ শীর্ষক ডুরা সংলাপে সঞ্চলনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শাহেদ শফিক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ‘ঘুরে দাঁড়াও ঢাকা ওয়াসা কর্মসূচী’র আওতায় নানান সফলতার কথা একটি ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেন।
এ সময় তিনি বলেন, বিগত প্রায় ১২ বৎসর যাবৎ রাজধানীতে পানি সরবরাহে কোন ঘাটতি নেই। বরং দৈনিক চাহিদার তুলনায় ঢাকা ওয়াসার পানি উৎপাদন সক্ষমতা বেশী। বর্তমানে দৈনিক পানির চাহিদা ২৬০-২৬৫ কোটি লিটার। আর ঢাকা ওয়াসার বর্তমান পানি উৎপাদন সক্ষমতা ২৭০-২৭৫ কোটি লিটার। বর্তমান গ্রীষ্ম মৌসুম ও চলমান পবিত্র রমযান মাসে ঢাকা ওয়াসা পানি সরবরাহের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহন করেছে এবং রমযান মাসে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পয়েন্টে ইফতার ও ওযুর জন্য মোবাইল ভ্যান, প্লাষ্টিক ট্যাংকের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
এছাড়াও তিনি জানান,বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার ১৮০ টি পানির পাম্পে SCADA (Supervisory Control & Data Acquisition) স্থাপন করেছে। এতে পাম্পগুলি সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুমে বসে মনিটরিং ও পরিচালনা করার সুবিধা হয়েছে। পানি শোধনাগারগুলির Transmission Network G E-PRV স্থাপন করে Mobile Apps এর মাধ্যমে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ঢাকা শহরে মোট ১৪৫ টি DMA এর মধ্যে এ পর্যন্ত ৭১ টি DMA স্থাপন করা হয়েছে। অবশিষ্ট DMA গুলির কাজ চলমান আছে যা জুন, ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
পরিবেশবান্ধব পানি ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ঢাকা ওয়াসার চলমান প্রকল্পের বিবরণ নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।
সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প, ফেজ-৩ এর প্রস্তুতিমূলক কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আরো দৈনিক ৪৫ কোটি লিটার পানি শোধন করে নগরীতে সরবরাহ করা হবে।
এডিবি, এএফডি, ইআইবি এবং কে এফ ডব্লিউ এর আর্থিক সহায়তায়মেঘনা নদী থেকে পানি এনে শোধনের জন্য ‘গন্ধবপুর পানি শোধনাগার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যার মাধ্যমে নারীতে দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করা হবে। আশা করা যাচ্ছে ২০২৩-২০২৪ সাল নাগাদ শতকরা ৭০ভাগ পানি ভূ-উপরিস্থ উৎস থেকে আর মাত্র ৩০ ভাগ পানি ভূ-গর্ভস্থ উৎস থেকে সংগ্রহ করে পরিবেশ বান্ধব ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে।
এসময় সাংবাদিকদের করা বিভিন্ন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমাদের দশ শতাংশ এলাকায় এখনো কিছু সমস্যা বিদ্যমান। এছাড়া মাঝে মাঝে পাইপ ফেটে গিয়ে পানিতে ময়লা দেখা যায়। অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সাথে সাথে তা সমাধান করে দেয়।
পানিতে মূলত দুই ধরনের দূষণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটা ভিক্টোরিয়া জনিত সমস্যা, যেটা অভিযোগের ভিত্তিতে তিন স্তরে পরীক্ষা করে সমাধান করে থাকি। অন্যটি হচ্ছে ময়লা কিংবা পোকামাকড়জনিত সমস্যা। এগুলো মূলত পাইপ ফেটে গিয়ে কিংবা অন্য কোনো সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। কোনো এলাকা থেকে অভিযোগ আসার সাথে সাথেই আমরা তা জনবল পাঠিয়ে সমাধান করে থকি।
অনুষ্ঠানে ওয়াসার এবং ডুরা সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।