অনলাইন ডেস্ক: চলতি করোনা মহামারীর কারনে দেশের শিক্ষা খাতে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে। তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের বাজেটকে শিক্ষা খাতের ভেতরে অন্তর্ভুক্ত করায় কাগজে-কলমে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেখানো হলেও শুধু শিক্ষা খাতে এখন আর সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয় না। যেমন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের খরচ তা শিক্ষা বাজেটের আকার বড় করছে।
গত ১০ বছরে শিক্ষা খাতে বাজেটের পরিমান বাড়লেও তা বাজেটের তুলনায় কমেছে।আবার আগামী বাজেটে শিক্ষা খাতে চলমান কর্মসূচিগুলোর জন্য বরাদ্দ খুব বেশি বাড়ছে না।
করোনা ভাইরাসের কারনে বন্ধ দেশের সব শিক্ষা প্রতিট্টহান।এমন পরিস্থিতিতে স্কুল থেকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া প্রকট হতে পারে।বাড়তে পারে শিশুশ্রম।
এদিকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপিতে শিক্ষা ও ধর্ম খাতকে আলাদা করে দেখালেও উন্নয়ন, অনুন্নয়নসহ মূল বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তিকে একসঙ্গে দেখানো হয়।যার ফলে শুধু শিক্ষ্যা ব্যাবস্থায় আসল বরাদ্দের পরিমান বলা কঠিন।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, এ দেশে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব আছে। শিক্ষা খাতে যে টাকা দেওয়া হয়, তা লোপাট হয়ে যায়। পুরো শিক্ষাব্যবস্থায় সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা খরচের সক্ষমতাও নেই। স্কুল-কলেজ ভবনের মতো অবকাঠামো নির্মাণের দিকে ঝোঁক বেশি।
এডিপিতে শিক্ষা ও ধর্ম খাতে ২ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ বেড়েছে।যার মধ্যে প্রায় ১০০ প্রকল্প শুধু মাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণের জন্য। গবেষণার জন্য রাখা হয়েছে দু-তিনটি প্রকল্প।তবে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধি এবং হাওর এলাকায় জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে ইমামদের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধকরণ প্রকল্পও শিক্ষা খাতে ঢুকে গেছে।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আরও বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। প্রাথমিক পর্যায়ে ভালো বেতন না দেওয়ায় মেধাবীদের এই পেশায় আনা যাচ্ছে না। ফলে মেধাবী প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে না। গণিত, বিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর মতে, শিক্ষা বাজেটকে বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে হবে। এখানে বিনিয়োগ করলে এক প্রজন্ম পরে এর সুফল পাওয়া যায়। নীতিনির্ধারকেরা কখনো এই খাতকে বিনিয়োগের অঞ্চল হিসেবে দেখেননি।