ভোক্তাকন্ঠ প্রতিবেদক: করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করার ধারায় এবার মসজিদে জামাতে নামাজ পড়ারও অনুমতি দিল সরকার। বেশ কিছু শর্ত সাপেক্ষে কাল বৃহস্পতিবার জোহর থেকে সাধারণ মুসিল্লরা মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবেন। আজ বুধবার ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এই কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের আলেমরা রমজান মাসের গুরুত্ব বিবেচনা করে মসজিদে নামাজ আদায়ের শর্ত শিথিল করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান। সম্প্রতি সরকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে। ফলে ১২টি শর্ত মেনে চলার শর্তে আগামীকাল জোহরের ওয়াক্ত থেকে সুস্থ মুসল্লিদের মসজিদে নামাজ আদায় করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শর্তগুলো হচ্ছে-
১. মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন।
২. মসজিদের গেটে হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। সব মুসল্লিকে মাস্ক পড়ে মসজিদে আসতে হবে।
৩. মুসল্লিদের বাসা থেকে ওজু করে ও সুন্নত নামাজ ঘরে আদায় করে মসজিদে আসতে হবে এবং ওজু করার সময় ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
৪. নামাজের কাতারে তিন ফুট পর পর দাঁড়াতে হবে।
৫.এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে।
৬. শিশু, বৃদ্ধ, যে কোনও ধরনের অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামাতে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন না।
৭. মসজিদের ওজুখানায় সাবান বা স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদের সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।
৮. সর্ব সাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।
৯. মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজন করা যাবে না।
১০. উল্লেখিত শর্ত পালন করে প্রত্যেক মসজিদে সর্বোচ্চ পাঁচ জন নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ইতেকাফের জন্য অবস্থান করতে পারবেন।
১১. করোনা থেকে রক্ষা পাবার জন্য মসজিদে নামাজ শেষে আল্লাহর দরবারে দোয়া করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
১২. খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।
এসময় বলা হয়, নির্দেশনা না মানলে স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সংশ্লিষ্ট মসজিদের দায়ীত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এর আগে ৬ এপ্রিল মুসল্লিদের ঘরে নামাজ পড়ার নির্দেশ দিয়েছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়। সে সময় নির্দেশ দেওয়া হয়, শুধু মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমরা মসজিদে নামাজ আদায় করবেন। জুমার জামাতে অংশগ্রহণের পরিবর্তে ঘরে জোহরের নামাজ আদায়ের নির্দেশ হয়। মসজিদে জামাত চালু রাখার প্রয়োজনে খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেমরা মিলে পাঁচ ওয়াক্তের নামাজ অনধিক পাঁচ জন এবং জুমার জামাতে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন। বাইরের মুসল্লি মসজিদে জামাতে অংশ নিতে পারবেন না।
এরপর ২৪ এপ্রিল পৃথক আরেক বিজ্ঞপ্তিতে তারাবি নামাজের বিষয়ে বিধি নিষেধ আরোপ করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। বলা হয়, খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদিম ও দুই জন হাফেজসহ সর্বোচ্চ ১২ জন রমজান মাসে মসজিদে এশা ও তারাবি’র নামাজে অংশ নিতে পারবেন।