ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
চাহিদায় পিছিয়ে পড়েছে ভোজ্লয লবন। দিনকে দিন বাড়ছে শিল্প লবণ । খাবারের চেয়ে লবণের বেশি ব্যবহার হচ্ছে ক্ষুদ্র থেকে বৃহত্তর শিল্পসহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের খাবার হিসেবে। সবচেয়ে বেশি চাহিদা পোশাকশিল্পের ডাইং ও ইটিপি পরিচালনায়।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে একক প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত প্রাপ্ত লবণের চাহিদা বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে লবণশিল্প সম্প্রসারণে কাজ করা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)।
সংস্থাটির প্রতিবেদনের তথ্য আরও বলছে, এখন মানুষের খাবারের জন্য ভোজ্যলবণ লাগছে মোট চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ। অন্যদিকে ভোজ্যলবণের চেয়ে দ্রুত বাড়ছে শিল্পলবণ ও প্রাণিসম্পদ খাতে লবণের ব্যবহার। তাতে আগামী তিন বছর বাদে খাবার লবণের চাহিদার চেয়েও দেড়গুণ বাড়বে ওইসব খাতে লবণের চাহিদা।
বিসিকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ভোজ্যলবণের চাহিদা ৮ লাখ ৯০ হাজার টন। আর ১০ লাখ ৬২ হাজার টন লবণের প্রয়োজন শিল্পখাত, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত মিলিয়ে। এর মধ্যে শিল্পলবণের চাহিদা ৬ লাখ ৯২ হাজার টন, প্রাণিসম্পদ খাতে লবণের চাহিদা ৩ লাখ ৩৬ হাজার ও মৎস্যখাতে ৩৪ হাজার টন।
এভাবে চলতে থাকলে তিন বছর মধ্যে (২০২৪-২৫ অর্থবছরে) শুধু শিল্পলবণের চাহিদা এককভাবে ভোজ্যলবণকে ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই সময় দেশে খাওয়ার জন্য লবণ লাগবে ৯ লাখ ২৩ হাজার টন। সে সময় শুধু শিল্পলবণের চাহিদা দাঁড়াবে ১০ লাখ ৫২ হাজার টন। পাশাপাশি প্রাণিসম্পদে লবণের চাহিদা হবে সাড়ে ৩ লাখ টন এবং মৎস্যখাতে ৩৯ হাজার টন।
ওই প্রতিবেদনের তথ্য আরও বলছে, দেশে বর্তমানে লবণ পরিশোধনে প্রক্রিয়াজাতকরণ ক্ষতি ১৭ শতাংশ। ফলে বর্তমানে দেশে মোট পরিশোধিত লবণের চাহিদা ১৯ লাখ ৫২ হাজার টন, যা পূরণের জন্য মোট ২৩ লাখ ৫২ হাজার টন অপরিশোধিত লবণ প্রয়োজন।
তিন বছর বাদে পরিশোধিত লবণের ২৩ লাখ ৬৪ হাজার টন চাহিদা পূরণে লাগবে ২৮ লাখ ৪৮ হাজার টন অপরিশোধিত লবণ। এমনটা বলছে বিসিক।
বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নূরুল কবির বলেন, দেশে এখনই শিল্পলবণ ও ভোজ্যলবণের চাহিদা সমান সমান হবে। কিন্তু কস্টিক সোডার চাহিদা রয়েছে সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ টন। সেটা হিসাবে নিলে এখনই ভোজ্যলবণের চেয়ে অন্য লবণের চাহিদা অনেক বেশি ফারাক হয়েছে। কিন্তু বিসিক প্রকৃত হিসাব দেয় না।
‘লবণ নিয়ে খেলা চলে দেশে। প্রকৃত উৎপাদন, আমদানি আর চাহিদা এখনো ধোঁয়াশা। প্রচুর অবৈধ লবণ দেশে আসে, সেগুলো চাহিদার হিসাবে আসে না।’