ভোক্তাকন্ঠ ডেস্কঃ
দুই দিন উত্থান আর তিন দিন দরপতনের মাধ্যমে মে মাসের আরও একটি সপ্তাহ পার করেছে দেশের দুই পুঁজিবাজার। বিদায়ী সপ্তাহে (২২ মে থেকে ২৬ মে) লেনদেন, সূচক ও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে।
তাতে নতুন করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি অর্থাৎ বাজার মূলধন কমেছে আরও ১ হাজার ৮৬৯ কোটি ৬৬ লাখ ৯৭ হাজার ১৬১ টাকা। আগের সপ্তাহে পুঁজি কমেছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। একই অবস্থা অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেরও (সিএসই)।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজার নিয়ে কারসাজি চক্রের নানা গুজবের পাশাপাশি ডলারের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে শেয়ারের দরপতন হয়েছে। দরপতনে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয়েছে। তবে আগামী সপ্তাহে (রোববার থেকে) বাজার ঘুরে দাঁড়াবে। দরপতন থেকে উত্থানের ধারায় ফেরার প্রত্যাশা তাদের।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আগামী সপ্তাহ থেকে পুঁজিবাজারে ভালো কিছু হবে। গত বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক ঘণ্টা আলাপ হয়েছে। আশা করছি, সবাই আমাদেরকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে।
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, বাজার নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো বড় কিছু নেই। আপনারা অন্যের কথায় কান দেবেন না। গুজবে প্রভাবিত হয়ে প্রতারিত হবেন না।
আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে ৩৯৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে মাত্র ১৬১টির, কমেছে ১৯৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ৩৯৩টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছিল ২০টির, কমেছিল ৩৬০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ছয়টির শেয়ারের দাম।
অধিকাংশ শেয়ারের দাম কমায় গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২০ দশমিক ২৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৩৭ পয়েন্টে। অপর দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৯ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৭৩ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ৯ দশমিক ২৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩০৭ পয়েন্টে।
সবগুলো সূচক কমায় বিনিয়োগকারীদের বাজার মূলধন কমেছে ১ হাজার ৮৬৯ কোটি ৬৬ লাখ ৯৭ হাজার ১৬১ টাকা। আগের সপ্তাহে কমেছিল ২১ হাজার ১৪০ কোটি ৮১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৩৭ টাকা। তার আগের সপ্তাহে কমেছিল ৫ হাজার ৯৪৮ কোটি ৯ লাখ ১৪ হাজার ৮৬৭ টাকার মূলধন।
মূলধনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। বিদায়ী সপ্তাহে বাজারটিতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৫৪ কোটি ২৩ লাখ ৫৯ হাজার ১২০ টাকার শেয়ার। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ২৩৫ কোটি ৭৩ লাখ ৫৭ হাজার ৭২৫ টাকার শেয়ার অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ১৮১ কোটি ৪৯ লাখ ৯৮ হাজার ৬০৫ টাকা, যা শতাংশের হিসাবে ৫ দশমিক ৬১ শতাংশ।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গেল সপ্তাহে ৩৪৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১১৯টির, কমেছে ২০৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এ বাজারের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৫৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ২৮০ পয়েন্টে।
সিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৪৬ কোটি ৮৩ লাখ ৯১ হাজার ৪৪১ টাকার। তার আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১২১ কোটি ৩৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৫ টাকার। লেনদেন আগের সপ্তাহের চেয়ে কমেছে।