‘এরা সুখের লাগি চাহে প্রেম, প্রেম মেলে না,
শুধু সুখ চলে যায়, এমনই মায়ার ছলনা।’
রবীন্দ্রনাথের এই গান আমাদের সবার জানা। তাঁর এই গানের দর্শন আমাদের সুখ নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখায়। আমরা কেউ জেনে, কেউ বা না জেনেই সুখের পেছনে ছুটি। এর ফলে কেউ সুখ পায়, আবার কেউ হারায়। বর্তমান বিশ্বে সুখি দেশের তালিকা করা হয়েছে। এখানে সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ড। ৯৫টি দেশের মধ্যে এ তালিকায় ৬৮তম অবস্থানে বাংলাদেশ। আজ বিশ্ব সুখদিবস জরিপে এ তথ্য ওঠে আসে।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন সমাধান নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। ২০ মার্চ বিশ্ব সুখ দিবসে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। শুক্রবার আংশিক প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া টেকসই উন্নয়ন নেটওয়ার্কের সুখবিষয়ক নবম বার্ষিক প্রতিবেদন এটি।
তালিকা অনুসারে বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ হিসেবে শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে ফিনল্যান্ডের পরেই রয়েছে, আইসল্যান্ড, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের নাম। এছাড়া তালিকায় যে ৯৫টি দেশের নাম প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে সবচেয়ে তলানিতে রয়েছে জিম্বাবুয়ে। এর ওপরেই রয়েছে তানজানিয়া, জর্ডান, ভারত ও কম্বোডিয়া।
সাধারণত মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), গড় আয়ু, মানবিকতা, সামাজিক সহায়তা, স্বাধীনতা ও দুর্নীতির ওপর ভিত্তি করে সুখী দেশগুলোর তালিকা করা হয়। কিন্তু এবার এর সঙ্গে যোগ হয়েছে করোনাভাইরাস পরিস্থিতিও। কোন দেশ কতটুকু ধাক্কা সামলেছে, সে প্রাধান্যও দেওয়া হয়েছে এবারের ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টে।
এবার বাংলাদেশের স্কোর ৫ দশমিক ২৮০। গত বছরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪ দশমিক ৮৩৩। তার আগের বছর স্কোর ছিল ৪ দশমিক ৪৫৬। আর ২০১৮ সালের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৪ দশমিক ৫০০।
এর আগে ২০২০ সালের ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্টে ১৫৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০৭তম। তার আগের বছর ১৫৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অবস্থান ছিল ১২৫তম। আর ২০১৮ সালে ১৫৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১১৫তম অবস্থানে ছিল।
এদিকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আংশিক রিপোর্টে বাংলাদেশ ছাড়া শুধু ভারতের নাম রয়েছে। এই তালিকায় ৯৫ দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান ৯২তম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির কারণে গত বছর বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ দেশেই নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার ছিল। কেবল ২২টি দেশের মানুষ পজিটিভ ছিল। তারা করোনাকে স্বাভাবিক রোগ হিসেবেই ধরে নিয়েছে। পাশাপাশি আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক ছিল।
ফিনল্যান্ডে ভাইরাসের সংক্রমণ পৌঁছালেও তার প্রভাব ছিল কম। ফলে দেশটির বাসিন্দারা উন্নত জীবনযাপন, নিরাপত্তা ও সরকারি সেবা সঠিকভাবে পেয়েছেন। কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়নি।
সূত্র: সমকাল