ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সরকার শুরু থেকেই কৃষিখাতকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। কৃষিখাতে ভর্তুকি এবং কৃষিঋণের পরিমাণ অনেকগুণ বাড়ানোর ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে তৃতীয় ধান উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে। কেবল ধান নয়, দেশের ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্যমোচন ও রপ্তানি আয়ে মৎস্য খাতের অবদান আজ সর্বজনস্বীকৃত।
বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) ‘আন্তর্জাতিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসব-২০২১’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০২০ সালের জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্যমতে মিঠাপানির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় এবং বদ্ধ জলাশয়ে চাষকৃত মাছ উৎপাদনে পঞ্চম। ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে প্রথম ও তেলাপিয়া উৎপাদনে চতুর্থ। দেশ এখন মাছে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণই শুধু না, উদ্বৃত্তও বটে। এ অর্জন জাতির জন্য গৌরবের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ‘আন্তর্জাতিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসব-২০২১’ পালিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যান। জাতির পিতার দেখানো পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
‘এরইমধ্যে আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। এ বছর আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি। এ সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। আমরা আজ আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উচুঁ করে দাঁড়িয়েছি।’
শেখি হাসিনা বলেন, আবহমান গ্রাম-বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রেখে যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দায়িত্বশীল পর্যটন কার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং এর সুফল যাতে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ভোগ করতে পারে, সেই লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পর্যটনশিল্প বর্তমান বিশ্বে শ্রমঘন এবং সর্ববৃহৎ শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নসহ দেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য পর্যটনের গুরুত্ব অবশ্যম্ভাবী। এ ব্যাপারে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি আমি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান করোনা মহামারির মধ্যেও রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি, পদক্ষেপ বাংলাদেশ ‘আন্তর্জাতিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসব’র মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, পর্যটনশিল্প ও ইলিশের গুরুত্ব ব্যাপক প্রচার করবে এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি অবদান রাখবে। আমি ‘আন্তর্জাতিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসব-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।