অনলাইন ডেস্কঃ
পোশাক শ্রমিক ও কর্মচারীদের মজুরি দিতে সরকারের প্রণোদনার তহবিল থেকে আবার কম সুদে ঋণ পেতে যাচ্ছেন দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকেরা। এর আগে করোনা মহামারীর কারনে এপ্রিল, মে ও জুনের মজুরি দিতেও ঋন পেয়েছিল পোশাকমালিকেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার ৪৭ ব্যাংকে এ–সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, শেষবারের মতো চলতি জুলাই মাসের মজুরি দিতে তহবিল থেকে ঋণ পাবেন রপ্তানিকারকেরা। গত জুনে যেসব উদ্যোক্তা ঋণ পেয়েছিলেন, এর বাইরে নতুন কেউ পাবেন না। প্রথম তিন মাস ঋণের জন্য ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হয়েছিল উদ্যোক্তাদের। চলতি মাসের ক্ষেত্রে সেটি হবে সাড়ে ৪ শতাংশ। সরকার সাড়ে ৪ শতাংশ ভর্তুকি দেবে। পোশাকশিল্পের মালিকদের এই সুবিধা দেওয়ার জন্য করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানের চলতি মূলধন বাবদ ঋণ দিতে ঘোষিত ৩০ হাজার কোটি টাকার তহবিল বাড়িয়ে ৩৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম কামাল হোসেন ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউল হাসান জানান, তাঁরা বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠি পেয়েছেন। আগের মতো মজুরির অর্থ শ্রমিক ও কর্মচারীর নিজস্ব মোবাইলে আর্থিক সেবা বা এমএফএস হিসাবে যাবে। টাকা তোলার খরচ ব্যাংককে দিতে হবে।
এর আগে করোনা মহামারী বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় লকডাউন। লকডাউনের কারনে গত মার্চে একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিতাদেশ আসতে থাকে। সব মিলিয়ে মোট ৩১৮ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়। গেল এপ্রিলে মাত্র ৩৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। মে মাসে তা ১২৩ কোটি ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়। আর জুনে রপ্তানি হয় ২২৫ কোটি ডলারের পোশাক।
করোনা মহামারীর প্রকোপে একের পর এক ক্রয়াদেশ স্থগিত ও বাতিল হলে রপ্তানিমুখী এ খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি দেওয়ার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা করে সরকার। গত মে মাসে বিজিএমইএর ১ হাজার ৩৭৭ ও বিকেএমইএর ৪১৯ সদস্য কারখানা এই তহবিল থেকে ঋণ পেয়েছে বলে জানা যায়।
পোশাকশিল্পের কয়েকজন উদ্যোক্তা জানান, গতবারের তুলনায় বর্তমানে ৭০-৮০ শতাংশ ক্রয়াদেশ আসছে। অনেকগুলো বড় ব্র্যান্ড স্থগিত ও বাতিল হওয়া পণ্য নিতে শুরু করায় পোশাক রপ্তানি জুন থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।