পুরান ঢাকার নবাব কাটারার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পরে ১০ বছর কেটে গেলেও রাসায়নিকের গুদাম সরিয়ে নিতে পল্লি প্রতিষ্ঠার প্রকল্পে মাটি ভরাটের কাজ শুরুই হয়নি।
ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাসায়নিক পল্লি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল নিমতলীর আগুনের পরপরই। তবে ২০১৯ সাল পর্যন্ত শুধু প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছিল, যার ব্যয় ধরা হয়েছিল ২০২ কোটি টাকা। জমির পরিমাণ ছিল ৫০ একর।এর মধ্যে ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চকবাজারের চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশন নামের একটি ভবনে আগুনে মারা যান ৭১ জন। এরপর আগের পরিকল্পনা বাতিল করে মুন্সিগঞ্জের ৩১০ একর জমিতে রাসায়নিক শিল্পপল্লি প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়।এরপরও টনক নড়েনি কারও। ঢিমেতালে চলছে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গুদাম-কারখানা স্থানান্তর কার্যক্রম। তারা কেউ এখনো সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারছেন না-কবে নাগাদ সরানো হবে এসব কারখানা।
প্রায় ১১ বছর আগে পুরান ঢাকার নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১২৪ জন মারা গেলেও কোনো মামলা হয়নি। শুধু ঘটনার কথা উল্লেখ করে বংশাল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছিল। নিয়ম হচ্ছে, কোনো ঘটনায় জিডি হলে পুলিশকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে হয়। কিন্তু এত বছর পরও প্রতিবেদন দেয়নি পুলিশ। উল্টো জিডির নথিপত্রও এখন থানায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
প্রতিটি দুর্ঘটনার পর কেমিকেলের মজুদ সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে নানা আশ্বাস ও একাধিক তদন্ত কমিটি হলেও বাস্তবে তাদের কাজের কোন বাস্তবায়ন নেই। এতকিছুর পরও পুরানো ঢাকা থেকে এই কেমিকেলের মজুদ সরানো হয়নি। এক্ষেত্রে দায়িত্ব পাওয়ার পরও যারা এ ব্যাপারে কোন তদারকি করেনি, পদক্ষেপ নেয়নি তাদের বিরুদ্ধে এখনই আইনি ব্যবস্থা নেয়া দরকার বলে মনে করছেন নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব।
গত শুক্রবার ভোররাতে পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় আগুনে মারা গেলেন ৪ জন। হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২০ জন, যাঁদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পল্লি প্রতিষ্ঠার আগে রাসায়নিকের ব্যবসা অস্থায়ী গুদামে সরিয়ে নেওয়ার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা-ও বাস্তবায়ন শেষ হবার আগেই এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।