হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে চলছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। প্রতিবছর ডিসেম্বর থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত সংকট দেখা গেলেও, এবার সেটা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এদিকে রমজান মাসে পানির জন্য ঘরে ঘরে নীরব হাহাকার চলছে। শৌচাগারের পানির জন্যও ভোগান্তিতে পড়েছেন পৌরবাসী। আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার প্রতিষ্ঠার ১৮ বছর অতিবাহিত হলেও, তাদের জন্য এখনও নির্মাণ হয়নি কোনও ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম। কর্তৃপক্ষ বিশুদ্ধ পানি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আসলেও, প্রশাসক রদবদলে এই সংকট কাটেনি।
জানা গেছে, ২০০৪ সালে আজমিরীগঞ্জ পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হয়। সীমানা নির্ধারণ জটিলতায় নির্বাচিত মেয়র না থাকা পৌরসভায় আজও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা হয়নি। পানির স্তরও নিচে নেমে গেছে। এতে সাধারণ কিংবা গভীর নলকূপগুলো দিয়ে পানি উঠছে না। নিত্য ব্যবহারের জন্য স্থানীয়রা পার্শ্ববর্তী পুকুর থেকে পানি নিচ্ছেন। যে নলকূপগুলোতে অল্প উঠছে, সেগুলোর সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে পানি নিচ্ছেন স্থানীয়রা। সুপেয় পানির অভাবে দিশেহারা তারা।
পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রেজুয়ান মিয়া, আকবর মিয়া, মজিবর মিয়া ও লাইজু বেগম জানান, ওয়ার্ডের প্রায় সব বাড়িতেই নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ে আছে। দুই-একটি নলকূপে যা পানি আসছে, সবাই খাবারের জন্য সেখানে ভিড় করছেন। রমজানে বাকি নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবহার্য পানির জন্য একমাত্র ভরসা মসজিদের পুকুর। দিনে পুরুষ ও শিশুরা গোসলসহ যাবতীয় কাজ ওই পুকুরে সারলেও, নারীদের জন্য রাতে প্লাস্টিকের ড্রাম ও বালতি ভর্তি করে নিতে রাখতে হচ্ছে। শৌচাগারের পানিও নিতে হয় এই পুকুর থেকে। কিন্তু সম্প্রতি পৌর পরিষদের পক্ষ থেকে পুকুরের সৌন্দর্যবর্ধন কাজের জন্য পুকুরটি শুকিয়ে ফেলায় সেখানেও পানিও কমে গেছে।
তারা আরও জানান, বর্তমানে নিত্য ব্যবহার্য কাজ পার্শ্ববর্তী মসজিদের পুকুরে সারলেও খাবার পানির জন্য যেতে হচ্ছে আধা কিলোমিটার দূরে। সারাদিন রোজা রেখে পানির এই সংকটের কারণে নাভিশ্বাস সবার। প্রতিবছর এই মৌসুমে পানি সংকটের সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন পৌরবাসী।
এ বিষয়ে আজমিরীগঞ্জ পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুলতানা সালেহা সুমী জানান, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পৌর এলাকায় গভীর নলকূপ বসানো নিয়ে সরকারে নিষেধ রয়েছে। ফলে জনস্বাস্থ্য অফিস থেকেও সমাধানে কিছু করা যাচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস ইতোমধ্যে সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম প্রকল্প হাতে নিয়েছে। দ্রুত এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।