ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: ঈদের পর মুরগি, খাসি ও গরুর মাংসের চাহিদা কমলেও বেড়েছে মাছের চাহিদা। সেই সঙ্গে বাড়তি যাচ্ছে দামও। তবে মাংসের দাম চড়া হলেও সেখানে ক্রেতা কম আর মাছের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার-সোনালি-লেয়ার মুরগির দাম আগের মতোই বাড়তি যাচ্ছে। পাশাপাশি গরু-খাসির মাংসেও বাড়তি দাম, তবে এসব মাংসের দোকানে ক্রেতা কম। ঈদের পর পর হওয়ার কারণে সব ধরনের মাংসের চাহিদা কমেছে বাজারে।
তবে মাছের বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি এবং মাছের চাহিদা বেশি দেখা গেছে। সেই সঙ্গে চাহিদা বেশি হওয়ায় মাছের দামও আজ বাড়তি যাচ্ছে।
এদিন বাজারের অধিকাংশ দোকানে গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। তবে কিছু কিছু দোকানে ৭৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অন্যদিকে খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়।
অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকায় এবং কক লেয়ার (লাল) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়।
তবে ঈদের পর ক্রেতাদের মাঝে মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে সব ধরনের মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। চাষের কই প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, পাঙাস মাছ প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, তেঁলাপিয়া প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৬০ টাকা, পাবদা মাছ প্রতি কেজি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা, রুই মাছ প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, শিং মাছ প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা, ট্যাংরা মাছ প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতল প্রতি কেজি ৩২০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, শোল মাছ প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর গুলশান সংলগ্ন লেকপাড় বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ঈদের পর ঢাকায় এসে আজ প্রথম বাজার করতে এসেছি। ঈদের সময় সবার বাসায় মাংসের আয়োজন থাকে তাই এখন সবার মাছ খাওয়ার প্রতি একটা চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। সে লক্ষ্যেই মাছ কিনতে এসেছি কিন্তু এসে দেখলাম সব ধরনের মাছের দাম আজ বেশি। অন্যদিকে মুরগি, গরু, খাসির মাংসের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের তেমন ভিড় নেই। যে কারণেই মনে হয় সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে।
রাজধানীর মহাখালীর বাজারের মাছ বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, ঈদের পর পর মাছের দাম একটু বেশিই যায়। কারণ এসময় সবাই মাংস ছেড়ে মাছ খাওয়ায় আগ্রহী হয় ফলে চাহিদা বেশি থাকে। অন্যদিকে ঈদের সিজন যাচ্ছে তাই এখন মাছের সরবরাহও গ্রাম এলাকা থেকে কম হচ্ছে। এছাড়া মাছের ফিডের অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকেই মাছের দাম বাড়তি যাচ্ছে। পাইকারি বাজার থেকেই বেশি দামে মাছ কিনতে হচ্ছে তাই সেই দামের প্রভাব খুচরা বাজারে পড়ছে।
রাজধানীর মালিবাগ বাজারের গরুর মাংসের বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, আজ বাজারে মাংসের ক্রেতার সংখ্যা কম। কারণ ঈদের পর পর খুব প্রয়োজন ছাড়া ক্রেতারা মাংস কিনে না। যাদের বাসায় আত্মীয়-স্বজন আসে বা কারও বাসায় কোন অনুষ্ঠান থাকলে কেবল তারা মাংস কিনে। তাই এই কয়েকদিন মাংস বিক্রি কিছুটা কম হবে।
একই বাজারের মুরগি বিক্রেতা এরশাদ আলী বলেন, ঈদের পর ব্রয়লার-সোনালিসহ অন্যান্য মুরগি দুই খাঁচি এনেছিলাম। কিন্তু এই কয়দিনে সব মুরগি বিক্রি করতে পারিনি। বাজারে মুরগির ক্রেতার সংখ্যা এখন কম। ঈদের পর পর তাই এখন কেউ মুরগি কিনছে না। দুই চারদিন গেলে এরপর বাজার ভালো হতে পারে। তবে এখন সব মুরগি বিক্রেতাদেরই ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে। ঈদে যেহেতু সবাই মাংস খায় তাই ক্রেতাদের চাহিদা এখন মাছের দিকেই বেশি।
সৌজন্যে, ঢাকা পোস্ট।