ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দেশে ভোজ্যতেলের উৎপাদন বাড়াতে ব্যাপক প্রণোদনা নিয়ে আগামী মৌসুম থেকেই মাঠে নামছে সরকার। তেল জাতীয় ফসলের চাষ বাড়াতে সরিষা, সূর্যমূখী ও চীনা বাদামের দুই হাজার টনের বেশি বীজ বিনামূল্যে সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি দেওয়া হবে নারিকেলের চারা। দেশের কোন অঞ্চলে কী পরিমাণ বীজ ও চারা সরবরাহ করা হবে, তার পথনকশা তৈরি করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পথনকশা তৈরি করে বীজ সংগ্রহ ও বিতরণের জন্য মাঠে নামবে সংস্থাটি।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত কয়েক বছর ধরে বৈশ্বিক বাজারের অস্থিরতার কারণে দেশে ভোজ্যতেলের বাজার অস্থিতিশীল যাচ্ছে। এ বছর সেই অস্থিতিশীলতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি দামে ভোজ্যতেল কিনতে হয়েছে। আগামীতে পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে, সেটাও পরিস্কার নয়। এ অবস্থায় সরকার পরিকল্পনা করেছে, দেশের ভোজ্যতেলের চাহিদার কমপক্ষে ৪০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ চাষাবাদের মাধ্যমে উৎপাদন করা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে সরকার এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে চায়। এ জন্য আসন্ন রবি মৌসুম থেকেই তেল জাতীয় ফসলের চাষ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমন ও বোরোর মাঝামাঝি সময়ে চাষের জন্য ১ হাজার ৮০০ টন স্বল্প জীবনকালীন সরিষার বীজ বিনামূল্যে সরবরাহ করবে কৃষি মন্ত্রণালয়। এ ধরনের বীজ প্রতি বিঘায় (৩৩ শতাংশ) এক কেজি লাগে। একই সঙ্গে সূর্যমুখীর হাইব্রিড হাইসান-৩৩ জাতের ৮০ টন বীজও বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে। এ ছাড়া চীনা বাদামের চাষ বাড়াতে বীজ দেওয়া হবে। এসব বীজ সংগ্রহ করার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নারিকেল তেলের উৎপাদন বাড়াতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিনামূল্যে নারিকেল গাছের চারা বিতরণ করা হবে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের নিজস্ব হর্টিকালচার সেন্টারে উৎপাদিত নারিকেল চারা সরবরাহ করা হবে কৃষকদের।
ট্যারিফ কমিশনের এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে প্রায় ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ১৮ লাখ টনের চাহিদা মেটানো হয় আমদানি করে। আমদানির মধ্যে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল প্রায় ৫ লাখ টন। সয়াবিন বীজ আমদানি হয় প্রায় ২৪ লাখ টন, যা থেকে চার লাখ টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল পাওয়া যায়। আর ১১ লাখ টন অপরিশোধিত পাম অয়েল আমদানি হয়।