ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: রোজার শুরুতেই রাজধানীর বাজারগুলোতে সয়াবিন তেল, পেঁয়াজ, জিরা, লবঙ্গ, এলাচ, আলু, হলুদ, আদা, তেজপাতা, ডিম ও খেজুরের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে আটা, ময়দা, ছোলা, রসুন, শুকনা মরিচ, চিনি ও ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
সপ্তাহজুড়ে রাজধানীর শাহজাহানপুর, মালিবাগ বাজার, কারওয়ান বাজার, বাদামতলী বাজার, সূত্রাপুর বাজার, শ্যামবাজার, কচুক্ষেত বাজার, মৌলভীবাজার, মহাখালী বাজার, উত্তরা আজমপুর বাজার, রহমতগঞ্জ বাজার, রামপুরা ও মীরপুর-১ নম্বর বাজারের পণ্যের দাম সংগ্রহ করে এ তথ্য দিয়েছে টিসিবি।
নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে টিসিবির তৈরি করা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, রোজার প্রথমদিন ২৪ মার্চ খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এতে এক লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৭৫ টাকা, যা আগে ছিল ১৬৮-১৭২ টাকা।
একই দিন বেড়েছে বোতলের পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম। দশমিক ৫৭ শতাংশ দাম বেড়ে বোতলের পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৮৭০-৮৯০ টাকা, যা আগে ছিল ৮৭০-৮৮০ টাকা। দ্বিতীয় রোজায় অর্থাৎ ২৫ মার্চ বেড়েছে খোলা পাম অয়েলের দামও। ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেড়ে খোলা পাম অয়েলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩৫ টাকা, যা আগে ছিল ১২৫-১৩০ টাকা। আলুর দাম বেড়েছে আজ। ২৫ শতাংশ দাম বেড়ে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা, যা আগে ছিল ১৬-২০ টাকা।
দাম বেড়েছে দেশি ও আমদানি উভয় ধরনের পেঁয়াজের। দেশি পেঁয়াজের দাম রোজার আগেই বেড়েছে। ২১ মার্চ ২৫ শতাংশ দাম বেড়ে দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, যা আগে ছিল ২৫ থেকে ৩৫ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রথম রোজায়। ২৪ মার্চ আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ বেড়েছে। এতে এক কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, যা আগে ছিল ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
রোজার দুদিন আগে বাড়ে আমদানি করা হলুদের দাম। ৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ দাম বেড়ে আমদানি করা হলুদের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা, যা আগে ছিল ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা। দেশি হলুদের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এতে দেশি হলুদের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, যা আগে ছিল ২০০ থেকে ২৩০ টাকা।
দেশি আদার দাম গত ১৯ মার্চ বেড়েছে। ২৭ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়ে দেশি আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা, যা আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। তবে আমদানি করা আদার দাম ৫ শতাংশ কমেছে। এতে আমদানি করা আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ২৬০ টাকা, যা আগে ছিল ১২০ থেকে ২৮০ টাকা।
তেজপাতার দামও বেড়েছে প্রথম রোজায়। ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ বেড়ে তেজপাতার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, যা আগে ছিল ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। একই দিন বেড়েছে খেজুরের দামও। সাধারণ মানের খেজুরের দাম ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ৪৫০ টাকা, যা আগে ছিল ১৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। ডিমের দাম বাড়ে ২১ মার্চ। ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ দাম বেড়ে এক হালি (৪টি) ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
রোজার আগের দিন বেড়েছে এলাচের দাম। ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়ে এলাচের কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকা, যা আগে ছিল এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৩০০ টাকা। আর প্রথম রোজায় বেড়েছে লবঙ্গের দাম।
১ দশমিক ৭৫ শতাংশ দাম বেড়ে লবঙ্গের কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ টাকা থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা, যা আগে ছিল এক হাজার ৩৫০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা। রোজার আগেই বেড়েছে জিরার দাম। গত ১৯ মার্চ ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ দাম বেড়ে জিরার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, যা আগে ছিল ৫৫০ থেকে ৬৫০ টাকা।
এদিকে, দ্বিতীয় রোজায় এসে কমেছে চিনির দাম। দশমিক ৮৫ শতাংশ কমে চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১১৮ টাকা, যা আগে ছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। একই দিন কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ব্রয়লারের দাম ৪ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, যা আগে ছিল ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা।
ধনিয়ার দাম কমেছে প্রথম রোজায়। ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ দাম কমে ধনিয়ার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা, যা আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৯০ টাকা। শুকনা মরিচের দাম কমে রোজার তিনদিন আগে। দেশি শুকনা মরিচের দাম ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪২০ টাকা, যা আগে ছিল ৩৯০ থেকে ৪৩০ টাকা। আর আমদানি করা শুকনা মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৪০ টাকা, যা আগে ছিল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা।
রোজার আগের দিন কমেছে আমদানি করা রসুনের দামও। ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ কমে আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, যা আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৭০ টাকা। প্রথম রোজায় কমেছে ছোলার দাম। ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ কমে ছোলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা, যা আগে ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা।
একই দিন কমেছে ময়দার দামও। ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ কমে খোলা ময়দার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, যা আগে ছিল ৬৪ থেকে ৬৬ টাকা। রোজা শুরুর আগে ১৯ মার্চ কমে আটার দাম। ৪ দশমিক ২৪ শতাংশ কমে খোলা আটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, যা আগে ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মাঝারি মানের চালের দাম কমেছে গত ২১ মার্চ। ৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমে মাঝারি মানের চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৬ টাকা, যা আগে ছিল ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা।