আন্তর্জাতিক ডেস্ক: শ্রীলঙ্কায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলায় বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প। দেশটির রাজধানী কলম্বোর বন্দরে বাংলাদেশি পণ্যবাহী জাহাজ আটকে থাকায় ব্যাপক লোকসানের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশে উৎপাদিত তৈরি পোশাক বিদেশের বাজার পর্যন্ত পৌঁছানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে কলম্বোর সমুদ্রবন্দর। গার্মেন্ট পণ্যবাহী কার্গো জাহাজগুলো বাংলাদেশের বন্দর থেকে প্রথমে শ্রীলঙ্কা যায়। সেখানে কন্টেইনার খালাস হওয়ার পর অন্য জাহাজে (মাদার ভ্যাসেল) তোলা হয়। তারপর ওইসব জাহাজে করে পণ্যগুলো পৌঁছায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বিভিন্ন বন্দরে।
বাংলাদেশের মোট উৎপাদিত গার্মেন্ট পণ্যের ৪০ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বন্দরে পৌঁছাতে শ্রীলঙ্কার রুট ব্যবহার করে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের বরাত দিয়ে যুক্তরাজ্যের দৈনিক পত্রিকা ডেইলি মেইল অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রীলঙ্কায় সরকার পতন আন্দোলন শুরুর পর অন্যান্যদের মতো কলম্বো বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও ধর্মঘটে যাওয়ায় বাইরের জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করার মতো জনবল সেখানে নেই।
ফলে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কার্গোজাহাজগুলো তাদের পণ্য খালাস করতে না পেরে আটকে আছে। বর্তমানে কলম্বোর বন্দরে এমন অন্তত ১০টি গার্মেন্ট পণ্যভর্তি কার্গো জাহাজ আটকে আছে বলে ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে জানিয়েছে দেশের গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। কয়েক মাস আগে শ্রীলঙ্কায় জ্বালানি সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে বন্দরের কার্যক্রম সীমিত হয়ে যাওয়ায় এ অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে বলে জানান বিজিএমইএ নেতারা।
এই পরিস্থিতিকে ‘অভূতপূর্ব’ উল্লেখ করে বিজিএমইএ নেতারা বলেন, কীভাবে এই সংকটের সমাধান করা যায়, তার উপায় খোঁজা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বায়ারদের (গার্মেন্ট পণ্য ক্রেতা) ফোরাম ও পণ্য চালান বিষয়ক নির্বাহীদের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
পাশাপাশি, কলম্বোর পরিবর্তে অন্য কোনো রুট পাওয়া যায় কি না— সে বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিজিএমইএর পছন্দ চীন অথবা সিঙ্গাপুরের সমুদ্রবন্দর।