ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: দেড় কেজি ওজনের একটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়। আর দুই কেজি ওজনের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। বড় সাইজের তরমুজ ধরা ছোয়ার বাহিরে। বড় তরমুজ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। প্রতিদিনই তরমুজের দাম বাড়ছে।
রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে তরমুজের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। অনেক ক্রেতাই দাম শুনে তরমুজ না কিনে ফিরে যাচ্ছেন।
গত কয়েকদিন আগে তরমুজের দাম কমে যাওয়া নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। চাষীরা তরমুজের প্রকৃত দাম না পেয়ে জমিতেই নষ্ট করে ফেলছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে হঠাৎ করে তরমুজের দাম এমন আকাশ ছোঁয়া হলো কিভাবে?
জানা গেছে, প্রচণ্ড গরমে তরমুজের চাহিদা বেড়েছে। অন্যদিকে তরমুজের সিজন শেষের দিকে হওয়ায় সরবরাহ কমে এসেছে। এতেই ঢাকা শহরে মৌসুমি এই ফলটির দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে।
শুধু রাজধানীতেই তরমুজের দাম বাড়েনি। দেশের অন্যান্য জেলা শহরগুলোতে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় তরমুজের দাম বেড়েছে।
বিক্রেতাদের দাবি করছেন, মোকামে দাম বেশি এবং সরবরাহ কমে গেছে। ছোট সাইজের ১০০ তরমুজ আট হাজার টাকার পরিবর্তে ১৮ হাজার ৫০০ টাকা, মাঝারি সাইজের তরমুজ ১৮ হাজারের পরিবর্তে ২৬ হাজার টাকা ও বড় তরমুজ ২২ হাজার টাকার পরিবর্তে ৩৮-৩৯ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। এ কারণে তারা বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিছুদিন আগেই ৮-১০ কেজি ওজনের তরমুজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩০-৪০ টাকা। এখন বড় তরমুজের সরবরাহ কম। বাজারের বেশিরভাগ ছোট তরমুজ। ছোট তরমুজ মানভেদে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০-৮০ টাকা। কোনো কোনো ব্যবসায়ী কেজির বদলে পিস হিসেবে বিক্রি করছেন। তারা দাম রাখছেন ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। কিছুদিন আগে এই তরমুজের পিস ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা আরও জানিয়েছেন, বাজারে এখন খুলনার তরমুজ বেশি। এই তরমুজ আকারে ছোট, তবে মিষ্টি বেশি। আর বরিশালের তরমুজ আকারে বড়, তবে এখন এই তরমুজের সরবরাহ কম এবং চাহিদাও কম। বরিশালের তরমুজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। সেইসঙ্গে প্রচণ্ড গরমে তরমুজের চাহিদা বেড়েছে। এ কারণেই হুট করে তরমুজের দাম বেড়েছে।
আবু তালেব নামের এক তরমুজ ব্যবসায়ী বলেন, বাজারে সরবরাহ কম থাকায় আড়তে প্রতিদিনই তরমুজের দাম বাড়ছে। আবার গরমের কারণে তরমুজের চাহিদা বেড়েছে। মৌসুমের শুরু থেকে এখন তরমুজের দাম বেশি। এমন গরম থাকলে তরমুজের দাম আরও বাড়তে পারে। কদিন পর তরমুজের কেজি ১০০ টাকা হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।
এদিকে তরমুজের দাম বাড়ায় অস্বস্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা। দাম শুনে অনেকেই তরমুজ না কিনে বাড়ি ফিরছেন।
একজন ক্রেতা বলেন, গত সপ্তাহেও ১০ কেজি ওজনের বড় তরমুজের কেজি কিনেছি ৩৫ টাকায়। আজ চার কেজি ওজনের একটি তরমুজ কিনলাম ৮০ টাকায়। ভ্যানে ৬০ টাকা কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। তবে ওই তরমুজ দেখে খুব একটা পছন্দ হয়নি। এই গরমে তরমুজ ফ্রিজে রেখে ইফতারিতে খেলে কিছুটা শান্তি পাই। তাই দাম বেশি হলেও কিনলাম।