ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: একই মানের চাল শুধু প্যাকেটজাত করেই খোলা বাজারের চেয়ে ৩০ শতাংশেরও বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে ভোক্তাদের ঠকিয়ে বাড়তি মুনাফা করছে সুপারশপসহ এ ধরনের প্যাকেটজাত পণ্য বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলো। অন্যদিকে প্যাকেটজাত চালের বেশি দামের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে খোলা বাজারে। এতে বেড়ে যাচ্ছে চালের দাম। একইভাবে চিনি, লবণসহ অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রেও প্যাকেটজাত করে বাড়তি মুনাফা করছেন ব্যবসায়ীরা। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এক পর্যবেক্ষণে খোলা ও প্যাকেটজাত পণ্যের দামের এই ফারাক উঠে এসেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অধিদপ্তরে বিভিন্ন কোম্পানির সুপারশপের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় দামের পার্থক্যের চিত্র তুলে ধরেন সংস্থাটির মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান। তিনি বলেন, চালসহ নিত্যপণ্যের খোলা ও প্যাকেটজাত অবস্থায় দামের অসংগতি দূর করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল খোলা অবস্থায় গড়ে ৬৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সেই একই মানের চাল প্যাকেটজাত করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। এসব ব্র্যান্ডের চাল অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিভিন্ন সুপারশপে বেচাকেনা হয়। অধিদপ্তর সুপারশপগুলো থেকেই তথ্য সংগ্রহ করেছে। তাতে দেখা গেছে, মিনিকেট চালে ১৪ থেকে ৩৩ শতাংশ এবং চিনিগুঁড়া চালে ২১ থেকে ২৯ শতাংশ মুনাফা করছে সুপারশপগুলো। একইভাবে লবণে সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ এবং ইলিশ মাছে ২৭ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করছে।
সফিকুজ্জামান বলেন, সুপার প্রিমিয়ামের নামে ৫২ টাকার চাল বিক্রি করছে ৮৮ টাকায়। কে কত টাকা লাভে পণ্য বিক্রি করছে, সেই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
অধিদপ্তরের এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সুপারশপগুলোর প্রতিনিধিরা বলেন, প্যাকেটজাত পণ্যের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) সুপারশপগুলো নির্ধারণ করে না; বাজারজাতকারী ব্র্যান্ডগুলোই তা নির্ধারণ করে। ফলে বাড়তি দামের দায় তাঁদের নয়। নিয়ম অনুযায়ী তাঁরা মুনাফা করছেন।
স্বপ্ন সুপারশপের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার তানিম খান বলেন, অতিরিক্ত নয়, বাজারের প্রচলিত নিয়মেই মুনাফা করা হচ্ছে।
মিনিকেট চাল নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বলেছে, মিনিকেট বলতে কোনো চাল নেই। এ বিষয়ে অধিদপ্তর মাঠে নামবে। তবে মোটা চালের ভোগের পরিমাণ বাড়লে মিনিকেট নামের চালের প্রতারণা কমবে।