ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: মিনিকেট বলে কোনো চাল নেই দাবি করে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, একসময় ভারত থেকে আনা মিনি প্যাকেটের বীজ থেকে এ চালের নামকরণ মিনিকেট করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ এ অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
সংলাপে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফের সভাপতি তপন বিশ্বাস আর সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হক।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, মিনিকেট বলে কিছু নেই। মিনিকেটের উৎপত্তি জানলে আর এই নাম দিত না। একসময় ভারত থেকে চিকন চালের বীজ আনা হতো মিনি প্যাকেটে করে। এ এই বীজ থেকে উৎপাদিত চালের নাম দিয়েছি আমরা মিনিকেট চাল! এটা বহুবার বলা হয়েছে। ভোক্তা অধিকার এই মিনিকেট নাম উচ্ছেদ করতে অভিযান চালাতে পারে। তবে আমাদের সে ক্ষমতা নেই।
চালের দাম ইস্যুতে মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের প্রকৃতি যেমন অস্থির, ব্যবসায়ীরাও অস্থির। দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুত আছে। আতপ চালে ২০ শতাংশ ট্যাক্স আরোপ করেছে ভারত। এটা দেখে দেশে সব ধরনের চালে দাম বাড়ানো শুরু হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এ মুহূর্তে আউশের যে উৎপাদন, আমি গত ১০-২০ বছরে এমন উৎপাদন দেখিনি। সে জায়গা থেকে চালের দাম বাড়া অনুচিত বলে মনে করি আমি।
মন্ত্রী বলেন, আমরা একটি আইন মন্ত্রিসভায় দিয়েছি। এটার খসড়া অনুমোদন হয়েছে। এখন ভেটিংয়ে আছে। সেখানে বলা আছে, ব্র্যান্ড নাম তারা (বিভিন্ন কোম্পানি) যেটাই দিক, রজনীগন্ধা দিতে পারে, গোলাপ ফুল, জরিনা, সখিনা নাম যাই দিক, কিন্তু ধানের জাতের নাম দিতে হবে। ২৮, ২৯, বিরি এসব নাম দিতে হবে। পাশাপাশি, ধানের ছাঁটাই যেটা সেটারও একটা রেশিও আমরা ঠিক করেছি। বেশি পলিসের ফলে চালের একটা অংশ নষ্ট হয়। এই ক্ষয় যেটা হয় সেটা সারাদেশের মোট উৎপাদনের একটি অংশ। এ কারণে এটাও আমরা নির্ধারণ করেছি। এটা পাস হলে অনেকেই সোজা হয়ে যাবে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যারা খুব ভালো চাল খান, প্যাকেট, তারা কিন্তু দামাদামি করেন না। কত দাম এই দাম, নিয়ে চলে যায়। এটার পেছনে দৌড়ানো সবার জন্য কষ্টকর। গ্রুপ ব্যবসায়ীরা শুধু চাল না অনেক কিছুই প্যাকেটজাত করে। তারা যেটা করে খোলা বাজারের ফাইন রাইস যদি ৬৫ টাকা হয় তারা সেটা ৯০ টাকায় বিক্রি করে। আমরা আবার এটা আগ্রহ করে নিয়ে যাই। এখানে আমাদেরও চিন্তা করতে হবে প্যাকেটের চাল খাব না। যাদের বেশি পয়সা তারা এটা চিন্তা করে না। যারা হীরার মালা গলায় দেয় তাদের কাছে ৮০-৯০ টাকা কিছুই না।
চালের বাজারে কারসাজি রোধে মিল গেট ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দৈনিক দাম ঘোষণার জন্য ওয়েবসাইট খুলতে বলা হয়েছে বলেও জানান খাদ্যমন্ত্রী।
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, কয়েকদিন আগে মিল মালিকদের এক সম্মেলনে আমি সতর্ক করেছি। তারা এখনও বলে যে মিল গেটে দাম বাড়ায়নি। তাদের বলা হয়েছে, তারা যেন মিল গেটের ওয়েবসাইট খোলে। প্রতিদিন এখানে কোন চালের দাম কত এটা তারা দেয়। পাইকারি ব্যবসায়ীদেরও ওয়েবসাইট খোলার বিষয়ে আহ্বান জানাব। তারা মিল গেটের সঙ্গে মিল রেখে জানাবে পাইকারি বাজারে চালের দাম আজ কত। তাহলে চালের দামে সামঞ্জস্য আনা যাবে। আমি মনে করি এটা অতি জরুরি। সমন্বয় করতে পারলে ভোক্তারা অনেক উপকৃত হবে। প্রয়োজনে চাল আমদানি করে যদি সারাবছর ওএমএস চালাতে হয় আমরা অবশ্যই চালাব।