ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: সরকারি ভাবে ১০ লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বোরো সংগ্রহ অভিযান, ২০২২ ও চলমান খাদ্যবান্ধব এবং ওএমএসসহ সামগ্রিক খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন গম এবং ভারত থেকে এক লাখ টন চাল, ভিয়েতনাম থেকে দুই লাখ ৩০ হাজার টন এবং মিয়ানমার থেকে দুই লাখ টন চাল আমদানি করবো। এ মুহূর্তে সর্বোচ্চ মজুদ আছে আমাদের। ফলে দাম কমতির দিকে রয়েছে। সামনে আরও কমে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারি ভাবে আমরা আরও চাল কিনবো। এ অর্থবছরে ১০ লাখ টনের বেশি চাল আমদানির চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। এ বছর জলবায়ু পরিস্থিতি খারাপ, ফলে আমন সংগ্রহ কম হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমাদের গম নিয়ে যে সংকট ছিল সেটা কেটে গেছে। আমাদের বছরে সাত লাখ টন গমের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ টন আসবে, পাইপ লাইনে রয়েছে এক লাখ টন এবং গুদামে মজুদ আছে এক লাখ ৩০ হাজার টন গম।’
সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘সরকারি ভাবে ভিয়েতনাম থেকে দুই লাখ টন সিদ্ধ ও ৩০ হাজার টন আতপ মিলে মোট দুই লাখ ৩০ হাজার টন চাল আনা হচ্ছে। এক লাখ টন চাল ভারত থেকে কেনা হবে। রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ টন গম আনার জন্য ইতোমধ্যে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। এরপর চুক্তি হয়েছে। আজকালের মধ্যে হয়তো এলসিও হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে আরও দুই লাখ টন চাল আনার প্রস্তাব বুধবার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে যাচ্ছে। ভিয়েতনাম থেকে আমদানির ক্ষেত্রে প্রতি টন সিদ্ধ চাল ৫২১ ডলার ও আতপ চাল ৪৯৪ ডলার করে পড়বে। প্রতি টন চাল ভারত থেকে ৪৪৩ দশমিক পাঁচ ডলার ব্যয়ে আনা হবে।’
সরকার ভিয়েতনাম থেকে থাইল্যান্ডের চাল বেশি দামে কিনছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘থাইল্যান্ডের কাছে আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। তারা সেভাবে সাড়া দেয়নি। আগে চুক্তির পরও চাল নেওয়া হয়নি বলে থাইল্যান্ডের সঙ্গে মতবিরোধ আছে। তারপরও তারা এগিয়ে এসেছে। আমরা থাইল্যান্ড থেকে চাল নেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মানের কারণে ভিয়েতনামের চালের দাম একটু বেশিই থাকে। দেশের মানুষকে স্বস্তি দিতে যেখান থেকে পারবো চাল আনতে হবে। টাকার দিকে তাকিয়ে তো লাভ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বেসরকারি ভাবে চাল আমদানির জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলাম। সেখানে ২৫ শতাংশ শুল্ক থাকার কারণে ৪৭ হাজার টনের মতো চাল এসেছে। শুল্ক আরও ১০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছি। আশা করি কিছু চাল আরও আসবে। মোটা চাল নয়, নন-বাসমতি মধ্যম মানের সরু চাল আসবে বলে আমরা বিশ্বাস।’
চাল আমদানির ক্ষেত্রে নতুন করে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘যারা চাল আনতে পারবেন তারা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।’
এ সময় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।