বিআর-২৮ ধানের চালের নাম মিনিকেট দেওয়া যাবে না

ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: বিআর-২৮ ধান থেকে মিলিংয়ের পর প্রাপ্ত চালের নাম বিআর-২৮ চাল দিতে হবে। মিনিকেট, কাজললতা, আশালতা, রাধুনী বা এমন অন্য কোনো নামে বাজারজাত করা যাবে না। এমন নিয়ম রেখে ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) বিধিমালা, ২০২৪’ চূড়ান্ত করা হয়েছে।

সম্প্রতি খাদ্য মন্ত্রণালয় ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩’ এর অধীনে এ বিধিমালাটি জারি করেছে।

আইনে কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য থেকে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে ওই ধরনের জাতের উপজাত পণ্য হিসেবে উল্লেখ না করে ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করাকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখন বিধিমালায় বিষয়টি আরও স্পষ্ট করা হলো। এ ক্ষেত্রে আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি ২ বছরের কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড।

বিধিমালার অভাবে আইনটি এখনো বাস্তবায়নে যায়নি সরকার। বিধিমালায় আইনের আরও বিভিন্ন বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে।

কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, বিপণন বা এ সংক্রান্ত ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিধিনিষেধ প্রতিপালনের কথা বিধিমালায় বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যদ্রব্য থেকে উপজাত হিসেবে প্রাপ্ত খাদ্যদ্রব্যকে ওই জাতের উপজাত হিসেবে নামকরণ (যেমন, বিআর-২৮ ধান থেকে মিলিংয়ের পর প্রাপ্ত চালের নাম বিআর-২৮ চাল) করতে হবে এবং অন্য কোনো নামে (যেমন- মিনিকেট, কাজললতা, আশালতা, রাধুনী বা এইরূপ অন্য কোনো নামে) নামকরণ করে বাজারজাত করা যাবে না।

খাদ্যদ্রব্যের বিদ্যমান কোনো স্বাভাবিক উপাদানের বর্ণ, গন্ধ, আকার-আকৃতি, গঠন, প্রকৃতি, ইত্যাদি অনুমোদিত সীমার বেশি অপসারণ করা যাবে না। খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট কোনো উপাদান (যেমন- কোনো কেমিক্যাল এবং কোনো ধরনের কৃত্রিম রং, পাথর, বালি, ইত্যাদি) মিশ্রিত করা যাবে না বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

সরকারি খাদ্য গুদামে রক্ষিত খাদ্যদ্রব্য অবৈধ ভাবে সংগ্রহ বলতে সরকারি খাদ্যদ্রব্য বিতরণের জন্য ডিও প্রাপ্তির পর কোনো ব্যক্তির নিচের কার্য সম্পাদন করাকে বোঝাবে- খাদ্যদ্রব্য উত্তোলন দেখিয়ে ওই গুদামে মজুত রাখা, গুদাম থেকে উত্তোলনের নির্ধারিত সময়ের পর খাদ্যদ্রব্য গুদামের ভেতরে মজুত রাখা এবং অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ দেখিয়ে সমন্বয় করা।

তবে শর্ত থাকে যে, দৈব-দুর্বিপাক, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কোনো কারণে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের লিখিত অনুমতির পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্যদ্রব্য উত্তোলনের নির্ধারিত সময়ের পর সাময়িক সময়ের জন্য ওই মজুত রাখা হলে তা সরকারি খাদ্য গুদামে রক্ষিত খাদ্যদ্রব্য অবৈধ ভাবে সংগ্রহ হিসেবে গণ্য হবে না বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদনকারী মিলার এবং বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে কোনো ব্যক্তি বা খাদ্য অধিদপ্তরের কাছে খাদ্যদ্রব্য বিক্রি বা সরবরাহের সময় খাদ্যদ্রব্যের বস্তা বা প্যাকেটের ওপর খাদ্যদ্রব্যের নাম, খাদ্যদ্রব্যের জাতের নাম, উৎপাদনকারী মিলের নাম, বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), উপজেলার নাম, জেলার নাম, উৎপাদনের তারিখ, নিট ওজন, মিলগেট মূল্য, সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) লিখতে হবে।

জব্দ করা খাদ্যদ্রব্য নিষ্পত্তিতে খাদ্য পরিদর্শক বা খাদ্য অধিদপ্তরের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা নমুনা সংগ্রহ করবেন এবং নমুনার পরিমাণ কমপক্ষে ৫ কেজি হতে হবে।

বিধিমালায় আরও বলা হয়, আদালত ভিন্ন কোনো আদেশ না দিলে একটি কমিটির মাধ্যমে জব্দ করা খাদ্যদ্রব্যের নিলাম সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নেতৃত্বে থাকবে মহানগর কমিটি ও সংশ্লিষ্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নেতৃত্বে থাকবে জেলা কমিটি।