ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: চট্টগ্রামে চিনি বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগে দুটি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববার এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
প্রতিষ্ঠান দুটি হলো- চট্টগ্রাম খাতুনগঞ্জের আর এম এন্টারপ্রাইজ ও রাজশাহীভিত্তিক নাবিল গ্রুপ।
জানা যায়, প্রতিষ্ঠান দুটি শুধু ফেব্রুয়ারিতেই ৮০০ টন চিনি পরস্পর বেচাকেনা করেছে। কিন্তু তাদের কাছে কোনো পাকা রশিদ পাননি ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই অনিয়মের কারণেই চিনির বাজারে কারসাজি করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে অভিযোগে জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আর এম এন্টারপ্রাইজের মালিক চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক আলমগীর পারভেজ। এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এটি। প্রতিষ্ঠানটি মূলত সব ভোগ্যপণ্যের ট্রেডিং ব্যবসা করে। অন্যদিকে এস আলম গ্রুপের সুগার কারখানায় উৎপাদিত সব চিনিই এই নাবিল গ্রুপের মাধ্যমেই সারাদেশে সরবরাহ করা হয়। দেশে চিনি পরিশোধনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এস আলম গ্রুপ। দিনে আড়াই হাজার টন টিনি পরিশোধনের ক্ষমতা আছে প্রতিষ্ঠানটির।
এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বলেন, জরিমানার মুখে পড়া দুটিই বড় প্রতিষ্ঠান। শুধু ফেব্রুয়ারিতেই নাবিল গ্রুপ থেকে ৮০০ টন চিনি কিনেছে আর এম এন্টারপ্রাইজ। কিন্তু ক্রয়-বিক্রয়ের কোনো পাকা রশিদ তাদের কাছে আমরা পাইনি। পাকা রশিদ ছাড়া অর্থাৎ মুখে মুখে ব্যবসা বা ডিও ব্যবসা আইনত বন্ধ। বড় স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে এমন অনিয়ম আমরা আশা করিনি। এ জন্যই আর এম এন্টারপ্রাইজকে ৩০ হাজার টাকা এবং নাবিল গ্রুপকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এস আলম সুগার মিলে অগ্নিকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এস আলম সুগার মিলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরে খুচরা বাজারে চিনির দাম কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে সাত টাকা বেড়েছে, তবে পাইকারি বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। চিনি বিক্রয়কারী দুটি প্রতিষ্ঠান আর এম এন্টারপ্রাইজ এবং নাবিল গ্রুপ কারও কাছেই কোনো ক্রয় বিক্রয় রশিদ না থাকায় তারা কত টাকায় কিনছে বা বিক্রি করছে তা আমরা জানতে পারছি না। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী এ সুযোগে বাজারে চিনির দাম বাড়িয়ে ফেলছে। এজন্যই অভিযান চালানো হয়েছে।
এটি মূলত সতকর্তামূলক জরিমানা উল্লেখ করে প্রতীক দত্ত বলেন, পরবর্তীতে একই অভিযোগ আবার পেলে বড় জরিমানা করা হবে। আর শুধু জরিমানা করেই তো বাজারে স্থিতিশীলতা আনা যায় না। ব্যবসায়ীরা যদি সৎ না হন, ক্রেতারা যদি হুজুগে না হন, তাহলে জরিমানা করে বাজারে কিছুটা সুফল দেওয়া যায়।
জরিমানার বিষয়ে আর এম এন্টারপ্রাইজের মালিক আলমগীর পারভেজ বলেন, আমি চিনি কিনেছি নাবিল গ্রুপ থেকে। কিন্তু তারা আমাকে বিক্রয় রশিদ দেয়নি। তাহলে আমি কোথা থেকে সরবরাহ করবে। কোনো কারখানাই তো বিক্রয় রশিদ দেয় না।
অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন খাতুনগঞ্জ ট্রেড এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ছগীর আহমদ। জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইনগত দিক থেকে পাকা রশিদ না থাকায় জরিমানা করাটা ঠিক আছে। কিন্তু বাস্তবতা তো কিছুটা ভিন্ন। পাকা রশিদ তো কারখানা প্রান্ত থেকে সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে সবাই সেটি রাখবে।