ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়। যা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে ৩১ থেকে ৩৫ টাকা বেশি।
এদিকে, পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা সরবরাহ ঘাটতিকে দায়ী করছেন। আবার চলমান বৃষ্টির কারণে রাজধানীতে পেঁয়াজের সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটে, ফলে দাম বেড়েছে।
মগবাজার, মোহাম্মদপুর, বনানী ডিএনসিসি কাঁচা বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে জানা যায়, দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকায়; যা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে ৩১ থেকে ৩৫ টাকা বেশি। গত বৃহস্পতিবার এই পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি ভারতীয় পেঁয়াজের দামও চড়া। আমদানি করা এ পেঁয়াজের কেজি কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, এক বছরের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১১৩ শতাংশ, আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১১৪ শতাংশ।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৪০ থেকে ৪৬০ টাকায়। তাতে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়ে ৮৮ থেকে ৯২ টাকা। কারওয়ান বাজারের চেয়ে ঢাকার অন্য বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি থাকে।
তবে মগবাজার ও মালিবাগ বাজারের যেসব বিক্রেতার কাছে পুরোনো দামে কেনা দেশি পেঁয়াজ আছে, তাঁরা ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজিতে তা বিক্রি করছেন। এদিকে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের অনেকেই দেশি পেঁয়াজ না কিনে আমদানি করা পেঁয়াজ কেনায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন। এসব বাজারে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজের দামও গত চার থেকে পাঁচ দিনের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
দেশি পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকায় সরকার চলতি বছরের ০৫ জুন ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়। আগস্টের শেষে দেশি পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় সরকার তখন ভারতের বাইরে আরও ৯টি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয়। ওই ৯ দেশ ছিল চীন, মিসর, পাকিস্তান, কাতার, তুরস্ক, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় আলু আমদানির পরিকল্পনার বিরোধিতা করে মতামত দিয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীদের আলু আমদানির অনুমতি দিতে পারেনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
শনিবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদমাধ্যমকে জানান, আগামী দুই মাস বা তার বেশি সময়ের জন্য দেশীয় ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশে পর্যাপ্ত আলু মজুদ রয়েছে। তাই আলু আমদানির প্রয়োজন নেই।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, নভেম্বরের শেষের দিকে নতুন জাতের আলু বাজারে আসতে শুরু করবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার কয়েকটি এলাকায় আগাম জাতের আলুর চাষ হয়েছে।
নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে এসব জেলা থেকে আগাম জাতের আলু পুরোদমে বাজারে আনার প্রস্তুতি নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
দেশে কৃষিপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিতে হয়। তবে আলুসহ অন্যান্য কিছু কৃষিপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হয়।