ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: খুলনায় কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ২৪০ টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। কাঁচা মরিচের দাম আকাশ ছোয়া হলেও অন্য সবজির দাম মোটামুটি নাগালের মধ্যেই রয়েছে। সেই সঙ্গে আদা, রসুন ও মশলার দামও কমছে বলে জানিয়েছেন খুলনার ব্যবসায়ীরা।
শনিবার খুলনার বড় বাজার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫/৩০ দিন ধরে একাধারে বেড়েই চলেছিল আদার দাম। ৪০০ টাকার নিচে মিলছিল না কোনো আদা। তবে সেই দাম এখন অনেকটা কমেছে। বর্তমানে আদা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়।
মশলা বিক্রেতা হালিম এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর মো. হালিম জানান, বর্তমানে আদা পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকার নিচে। তবে পাইকারি দামে আদা কিনে খুচরা বিক্রেতারা তো তাদের লাভ রেখেই বিক্রি করবেন। সে কারণে ২৮০ টাকায়ও অনেক জায়গায় আদা বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের মশলা সামগ্রী বিক্রেতা মো. আব্দুল্লাহ বলেন, বড় বাজারে আদার দাম কম থাকতে পারে। কিন্তু খুচরা বাজারে সেই দামে কখনোই আদা বিক্রি হবে না। আমরা বস্তাধরে আদা কিনে আনি। সেখান থেকে বাছাই করলে ৭/৮ কেজি খারাপ আদা পাওয়া যায়। সেই হিসাব করেই আমাদের বিক্রি করতে হয়।
খুলনার অন্যতম টুটপাড়া জোড়াকল বাজার, ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার, রূপসা বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার, চানমারী বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার ওইসব বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়। আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ টাকায়, যা গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চলছে।
সোনাডাঙ্গা পাইকারি বাজারের মোরেলগঞ্জ বাণিজ্য ভাণ্ডারের মালিক আ. মালেক বলেন, দেশি পেঁয়াজের দাম আগের মতোই রয়েছে। দিনেদিনে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ কমছে। তবুও দাম বাড়েনি। তিনি বলেন, আমদানি করা পেঁয়াজ দেশি পেঁয়াজের দামের ওপর কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
এদিকে, খুলনার বাজারগুলোতে গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে সবজির দাম। টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের সবজি বিক্রেতা মাসুম বলেন, গত সপ্তাহের মতোই বাজারে বেগুন বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা, তবে বেগুনের জাতভেদে দাম একটু কমও রয়েছে। এছাড়া কাঁকরোল ৫০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা, পটল ৩০-৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, কচু ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে।
এই ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন একটু আধটু বৃষ্টি হওয়ায় সবজির দাম কমেছে। তবে কাঁচা মরিচের দাম দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। বৃষ্টির কারণেই দাম বেড়েছে।
নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজারের মুরগি বিক্রেতা রইস জানান, এই সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া সোনালী ২২০ টাকা, লেয়ার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সবজির দাম কমলেও মাছের দাম রয়েছে আগের মতোই। ৪৮০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে নানা সাইজের চিংড়ি। এছাড়া রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, দেশি মাগুর ও শিং মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কৈ মাছ ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ টাকা, কার্প জাতীয় মাছ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেন বলেন, পচনশীল পণ্যের বিষয়ে আমাদের তেমন কোনো কিছু করার থাকে না। তবে অন্য পণ্যের বিষয়ে আমরা অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি। সে ক্ষেত্রে যথাযথ অভিযোগ থাকতে হবে।