ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: আসন্ন রমজান মাসকে কেন্দ্র করে রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে বাড়তে শুরু করেছে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম। খুচরা বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগি কিনতে কেজিতে গুনতে হচ্ছে ২১০ টাকা। অথচ সপ্তাহখানেক আগেও এটি পাওয়া যেত ১৯০-২০০ টাকায়।
এদিকে, বাজার ভেদে দেখা গেছে ডিমের দামের ভিন্নতা। বড় বাজারগুলোতে হালি ৪৮ টাকা আর এলাকা বা মহল্লার দোকানগুলোতে ৫০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নিউ মার্কেটের বনলতা কাঁচাবাজার সংলগ্ন মুরগির দোকানগুলোতে ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ২১০-২৩০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তবে অধিকাংশ দোকানগুলোতেই ব্রয়লারের দাম লিখে রাখা হয়েছে ২৩০ টাকা কেজি। এছাড়া কক মুরগি ৩৪০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩২০ টাকা আর বড় কক মুরগি ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।
বিসমিল্লাহ চিকেন হাউজের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন বলেন, আজকে ব্রয়লার ২২০ টাকা রেটে বিক্রি করছি। দাম কিছুটা বেড়েছে। আমাদের করার কিছু নেই। আড়ত থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
রূপসা চিকেন হাউজের ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন বলেন, ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। বোর্ডে ২৩০ টাকা বিক্রয় মূল্য লেখার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওইটা আগের মূল্য ছিল। মাঝখানে একটু দাম বাড়ছিল। এখন নতুন করে লেখা হয় নাই।
সরকারি সংস্থার ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৯০-২০০ টাকার মধ্যে। আর ডিমের দাম ছিল ৪৫ টাকা হালি। এখন এই দুটি পণ্যের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।
প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, দাম বাড়ানো ও কমানোর মূল কারিগর হচ্ছে কোম্পানিগুলো। তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। হঠাৎ করেই তারা ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে মার্কেটে প্রভাব পড়ে। আবার হঠাৎ করেই কমিয়ে দেয় যার কারণে মার্কেটে দাম কমে। এই বিষয়গুলো সরকারকে কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। আমরা খামারিরা অসহায়। আমাদের হাতে কিছুই করার থাকে না।
এদিকে, ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ায় বেশ অস্বস্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। তারা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে নিম্নআয়ের মানুষের প্রাণিজ আমিষের উৎস ব্রয়লার মুরগির দামও হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। রোজায় ব্রয়লার মুরগি দাম আরও বাড়লে জীবন ধারণ করা এক প্রকার দুরূহ হয়ে যাবে।
তাই শব-ই-বরাত, রোজাকে কেন্দ্র করে ব্রয়লার মুরগির বাজার যেন অস্থিতিশীল হয়ে না ওঠে সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান ক্রেতারা।
রুবেল মিয়া নামে এক হোটেল ব্যবসায়ী বলেন, সোমবার ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা কেজি দরে কিনেছি। মঙ্গলবার ২২০ টাকা করে কিনতে হচ্ছে। মনে হচ্ছে সামনে রোজার কারণে আরও দাম বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। দ্রুতই লাগাম টানা প্রয়োজন এই মূল্য বৃদ্ধির।
হানিফ মিয়া নামে আরেক ক্রেতা বলেন, সাধারণ মানুষ সবসময় চায় দ্রব্যমূল্য দাম হাতের নাগালে থাকুক। ব্যবসায়ীরাও লাভ করুক। কিন্তু তারা সাধারণ মানুষের পকেট কাটছে। যা দাম চাইছে তাই দিতে হচ্ছে কিছুই করার নেই। তাই সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মহলকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।