ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: হঠাৎ করেই ভোক্তা পর্যায়ে অস্থির হয়ে উঠেছে ডালের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে প্রায় সব ধরনের ডাল জাতীয় পণ্যের দাম।
খুচরা বাজারে এক কেজি মসুর ডাল কিনতে ভোক্তাদের গুনতে হচ্ছে ১৩৮-১৪০ টাকা। আর মুগ ডালের দাম হয়েছে ১৬৮ টাকা। এলসি খুলতে না পারলে আমদানিনির্ভর ডালের বাজার আরও ঊর্ধ্বে উঠতে পারে বলে মনে করছেন ব্যাবসায়ীরা।
রোববার দুপুরে রাজধানীর নিউ মার্কেট কাঁচাবাজার মার্কেট সংলগ্ন খুচরা দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, মুগ ডাল ১৬৮ টাকা, বুটের ডাল ১০৮ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৭৫ টাকা, মসুর ডাল ১৪০ টাকা, ছোলার ডাল ৯৬ টাকা, খেসারির ডাল ১০০ টাকা, ডাবলি ৭২ টাকা ও মোটা ডাল ১১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
খুচরা দোকানিরা জানান, এক সপ্তাহ আগেও মুগডাল ১২০-১৩০ টাকা, বুটের ডাল ৯০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৬৫-৭০ টাকা, মসুর ডাল ১৩০ টাকা, ছোলা ৮৫ টাকা, খেসারি ডাল ৯০ টাকা ও ডাবলি ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হত।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পরিসংখ্যানেও দেখা যাচ্ছে, এক মাসের ব্যবধানে মসুর ডালের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ, অ্যাংকর ডালের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ ও ছোলা ডালের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
টিসিবি বলছে, শনিবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগরীর বাজারগুলোতে মসুর ডাল (বড় দানা) ১১০ টাকা, মসুর ডাল (মাঝারি দানা) ১২৫ টাকা, মশুর ডাল (ছোট দানা) ১৪০ টাকা, মুগ ডাল (মানভেদে) ১৬০ টাকা, অ্যাংকর ডাল সর্বোচ্চ ৮০ টাকা ও ছোলা (মানভেদে) ৯৫ টাকা কেজি দামে বিক্রি হয়েছে (টিসিবি প্রকাশিত সর্বোচ্চ দাম এখানে উল্লেখ করা হয়েছে)।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি ভাবেই বেশি দামের কারণে খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। আড়ৎ থেকে অতিরিক্ত দামে ডাল কিনে আনতে হচ্ছে, সেই কারণে গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেশি দামে ডাল বিক্রি করতে হচ্ছে।
নিউ মার্কেট সিটি জেনারেল স্টোরের কর্মচারী নুরুন্নবী বলেন, সব ধরনের ডালের দামই কিছুটা বেড়েছে। ডাল মানুষ খুব কম পরিমাণে নিচ্ছে। আমাদের কী করার আছে? পাইকারি মার্কেট থেকেই বেশি দামে আনতে হচ্ছে, সেই কারণে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, নির্বাচনের পর থেকে সবকিছুর দামই বেড়েছে। এগুলোর পেছনে খুচরা ব্যবসায়ীদের হাত নেই। যারা হোলসেলার বা বড় ব্যবসায়ী, তারাই মূলত বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন।
এদিকে, সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জনগণের হয়ে কাজ করতে হবে।
জসিম উদ্দিন নামের এক ক্রেতা বলেন, আমি স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানের ডাইনিং ম্যানেজার। প্রতিবেলা খাবারের সাথে ডাল দেই। তবে বাড়তি দামের কারণে এখন ডাল কেনা অনেক কমিয়ে দিয়েছি। ১৪০ টাকা কেজি ডাল কিনে খাওয়ানো সম্ভব না। সেজন্য কম ডাল দিয়েই বেশি মানুষকে খাওয়াচ্ছি। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হাতের নাগালে রাখা উচিত।