ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: হঠাৎ চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। দেড় সপ্তাহে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের পাইকারি ও খুচরা চালের বাজার ঘুরে এমন তথ্যই মিলেছে।
বিক্রেতাদের কেউ অবরোধকে দুষছেন, তো কেউ দুষছেন মিল মালিকদের। তবে রাজধানীর পাইকারি বা খুচরা চাল বিক্রেতাদের কেউই নির্দিষ্ট করে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ জানাতে পারেননি।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি কেজি মিনিকেট ৬০ থেকে ৬১ টাকা, নাজিরশাইল ৬৩ টাকা, আটাশ ৫২ টাকা, পাইজাম (স্বর্ণা) ৫১ থেকে ৫২ টাকা, পাইজাম (গুটি) ৪৭ থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, দেড় সপ্তাহ আগে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৫৮ টাকা, আটাশ ৫৪ টাকা, পাইজাম (স্বর্ণা) ৪৯ থেকে ৫২ টাকা, পাইজাম (গুটি) ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা ছিল। দেড় সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
অন্যদিকে, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৬৭ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ টাকা, আটাশ ৫৩ টাকা, পাইজাম (স্বর্ণা) ৫৩ টাকা, পাইজাম (গুটি) ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দেড় সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারে ২ থেকে ৩ টাকা কম ছিল সব ধরনের চালের দাম।
কৃষি মার্কেটের পাইকারি চালের বাজারের লামিয়া রাইসের ম্যানেজার মো. সেলিম বলেন, বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা চালের দাম বেড়েছে। তবে কী কারণে দাম বাড়ছে, আমরা বলতে পারি না। মিল মালিকরা বলছেন, ধান কম উৎপাদন হয়েছে, তাই দাম বেশি। কিন্তু বাজারে চালের পর্যাপ্ত সরবরাহ আছে। তার মানে মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন।
আগামী এক মাসের মধ্যে নতুন চাল উঠলে দাম কমার আশা করছেন এ বিক্রেতা।
ফাতেমা রাইসের ম্যানেজার নূর মোহাম্মদ বলেন, নতুন চাল ইতোমধ্যে উঠতে শুরু করেছে। নতুন চাল উঠলেই দাম বাড়ে। বাজারে ও মিলে পর্যাপ্ত চাল আছে। তারপরও দাম বাড়ছে। সরকারের যথাযথ তদারকি নেই বলেই এভাবে কারণ ছাড়া চালের দাম বাড়ছে।
তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটরা শুধু খুচরা আর পাইকারি বাজারেই অভিযান চালান, মিলগুলোতে যান না। বাজারে অস্থিরতা কমাতে হলে সব যায়গায় তাদের মনিটরিং করতে হবে। আমরা মিল মালিকদের কাছ থেকে যে দামে কিনে আনি, কিছুটা লাভ রেখে বিক্রি করি। দাম আমরা বাড়ায় না।
একই কথা বলেন মক্কা রাইসের ম্যানেজার শাখাওয়াত। তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট বাজারে এসে যে দোকানে পলিথিন পায় তাকে ধরে। কিন্তু যে জায়গায় পলিথিন উৎপাদন হয় সেখানে যায় না। চালের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই। মিলগুলোতে ম্যাজিস্ট্রেট যায় না। পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান করে চালের দাম কমানো যাবে না। যদিও অনেকদিন ধরে ম্যাজিস্ট্রেট বাজারেই আসে না।
দুলাল নামে এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, গত কয়েকদিনের হরতাল-অবরোধে গাড়ি আসতে পারছে না, যে কারণে চালের দাম বাড়ছে। আশা করি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আর নতুন চাল উঠলে দাম কমে যাবে।