ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: সিলেটে এক সপ্তাহের ব্যবধানে টমেটোর দাম বেড়েছে ১৪০ টাকা। গত সপ্তাহে ১০০ টাকা কেজিতে টমেটো বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। কেজিপ্রতি ১০০ টাকা বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। ৩৫-৪০ টাকার আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে আদার দাম কমেছে কেজিতে ২০০ টাকা। একই ভাবে কেজিতে ২০ টাকা কমেছে চায়না রসুন, দেশি ডালের (বড় সাইজ) এবং ব্রয়লার মুরগির দাম। স্থিতিশীল পেঁয়াজ ও ডিমের দাম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে এলসি সময়মতো খুলতে না পারায় বাজারে বড় আকারের চায়না আদা ও রসুন বাজারে নেই। আর চিনির দাম কেজিতে পাঁচ টাকা করে কমেছে। এখন প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা দরে।
কেজিতে ২০ টাকা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। গেল সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন সেটি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে এক হালি মুরগির ডিম কিনতে এখন ৪৮ টাকা লাগছে। এছাড়া মাছ ও মাংসের বাজারও চড়া। এক কেজি গরুর মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খাসির মাংস ১০০০ থেকে ১০৫০ টাকা, রুই মাছ ৩৮০ টাকা, ছোট সাইজের চিংড়ি ৬৫০-৭০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ১০০০-১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সিলেটের বাজারে এর আগে এতো দাম উঠেনি টমেটোর। ফলে টমেটো ও খাসির মাংস খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হচ্ছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের।
নগরীর রিকাবীবাজারে খাসির মাংস কিনতে আসা স্কুলশিক্ষক ফয়সাল আহমদ বলেন, বাসায় মেহমান (অতিথি) আসবেন। তাই রোস্টের মোরগ ও খাসির মাংস কিনতে এসেছি। মাংস কিনতে গিয়ে সব বাজেট শেষ। যে রোস্টের মুরগি দুই সপ্তাহ আগেও ২০০ টাকায় কিনেছি সেটি আজ ২৬০ টাকায় কিনতে হয়েছে।
এদিকে, বেড়েছে সোনালি মুরগির দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫০-৬০ টাকার বেড়েছে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০০-৭০০ টাকা। আর লাল মোরগ (পাকিস্তানি) প্রতি পিস যথারীতি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকা দরে।
মদিনা মার্কেট এলাকায় নিত্যপণ্য ও শাক-সবজি কিনতে আসা মাইক্রোবাসচালক আবিদ মিয়া বলেন, প্রতিদিনই তো কোনো না কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে। শাক-সবজির দামও চড়া। মাছ-মাংসের বাজার তো অস্থির। একটার দাম কমলে অন্যটার দাম বাড়ছে। অবস্থায় আমাদের মতো শ্রমজীবী ও সীমিত আয়ের লোকজন চরম বিপাকে আছি।
নগরীর রিকাবীবাজার, বন্দরবাজার, আম্বরখানা, সুবিদবাজার, মদিনা মার্কেট এবং মেডিকেল রোডসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে শাক-সবজির পরিমাণ তুলনামূলক কম। বাজারে প্রতি কেজি আলু ৪৫ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০০ টাকা, ধনিয়া পাতা ২৫০ টাকা, টমেটো ২৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৭০ টাকা, গাজর ৭০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঝিঙা ৭০ টাকা, বেগুন ৫০-৫৫ টাকা ও পেঁপে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি পিস মিডিয়াম সাইজের পানি লাউ ৭০-৮০ টাকা, মিষ্টি লাউ প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে ১০০-১৫০ টাকা দামে। প্রতি হালি কাঁচকলা ৪০ টাকা, প্রতি আটি লাল ও পালং শাক ২০-২৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা আবদুল কুদ্দুস জানান, সরবরাহ কম থাকায় দাম গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে সবজির দাম একটু বেড়েছে।
নগরের ঘাসিটুলা এলাকা কামাল স্টোরের মালিক মো. কাওসার আহমেদ জানান, দোকানে চায়না আদা ও রসুনের চাহিদা থাকলেও সিলেটের বাজারে তা মিলছে না। তাই দেশি আদা ও ভারতীয় রসুন দিয়ে চাহিদা মেটানো হচ্ছে। তবে চায়না রসুনের মতো ভারতীয় রসুনের মান অতটা উন্নত নয়।