ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: সপ্তাহের ব্যবধানে সবজি ও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন সবজির উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় সব ধরনের সবজির দাম কমেছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচা বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চলতি সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। গত সপ্তাহের তুলনায় মুরগির দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমেছে বলে জানিয়েছেন জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শেওড়াপাড়া বাজারের মুরগি বিক্রেতা রাকিব বলেন, গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ১৯০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। পাইকারি বাজারে দাম কমায় আমরাও কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমিয়ে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করছি।
তিনি বলেন, সোনালি ৩২০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা কেজি, লেয়ার ৩৪০ টাকা টাকা দরে বিক্রি করছি।
চলতি সপ্তাহে শীতকালীন সবজি আমদানি ভালো থাকায় শিম, গাজর ও ফুলকপিসহ দাম সব ধরনের সবজির দাম কমেছে।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, চলতি সপ্তাহে সব ধরনের সবজির দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে। শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়তে থাকায় এ দাম কমেছে। আগামী সপ্তাহে সবজির দাম আরও কমবে বলেও মনে করছেন সবজি ব্যবসায়ীরা।
তালতলা বাজারের সবজি বিক্রেতা রফিক বলেন, শীতের সবজি বাজারে প্রচুর পরিমাণে আসছে। এর প্রভাব দামে পড়েছে। গত সপ্তাহে যে শিম ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি, সেটা আজ ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি করছি। আগে ছোট সাইজের ফুলকপি বিক্রি করেছি ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে। এখন এ দামেই বড় সাইজের কপি ক্রেতারা পাচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে সবজির দাম আরও কমে আসবে।
১০ থেকে ২০ টাকা দাম কমে বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকায়, ধুন্দল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৭০ থেকে ৯০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ২০০ টাকা, কলার হালি ৩০ টাকা, জালি কুমড়া ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, নতুন আলু ১৪০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১৫০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ছোট বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ছোট ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি কেজি মুলা ৫০ টাকা, শিম ১০০ থেকে ১২০ টাকা, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ টাকা এবং গাজর ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে লাল শাকের আঁটি ২০ টাকা, লাউ শাক ৩০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ২৫ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়। আর দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮০ টাকা।
বাজারে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজিপ্রতি এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
৪০০ গ্রামের ইলিশ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকা দরে। চাষের শিং মাছের কেজি (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৭০০ টাকা। প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৬০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা, মলা ৪৫০ টাকা, বাতাসি টেংরা এক হাজার ২০০ টাকা, কাচকি মাছ ৬০০ টাকা এবং পাঁচমিশালি মাছ ২২০ টাকা, রূপচাঁদা এক হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাইম মাছ এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, দেশি কই এক হাজার টাকা, মেনি মাছ ৭০০ টাকা, শোল মাছ ৭০০ টাকা ও আইড় মাছ ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা বাজারে বিক্রেতা ইউনুস হোসেন বলেন, চিনির দাম কমেনি বরং আগের থেকে ৫ টাকা কেজিতে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। শেষ মঙ্গলবার পাইকারি বাজারে প্রতি বস্তায় চিনির দাম ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এছাড়া পাইকারি পর্যায়ে প্যাকেট চিনির কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। এতদিন আমরা কেজি ১৩১ টাকায় কিনে ১৩৫ টাকায় চিনি বিক্রি করতাম। এখন কিনতে হয় ১৩৫ টাকা দরে। বিক্রি ১৪০ টাকা।
আনিসুল ইসলাম নামের একজন ক্রেতা বলেন, ব্যবসায়ীরা এখন পুরাই অসাধু। পেঁয়াজ আমদানি করতে বেশি টাকা লাগবে সেই খবর শুনেই তারা দাম বাড়িয়েছে। কিন্তু আলু আমদানি হচ্ছে সেটা কোনো প্রভাব নেই। চিনির শুল্ক কমেছে সেটার কোনো খোঁজ নেই।
তিনি বলেন, আসলে কোনো পণ্যের দাম বাড়লে বিক্রেতারা সঙ্গে সঙ্গে সেটি কার্যকর করেন। কিন্তু কমলে সে দাম কার্যকর করতে তাদের গড়িমসির শেষ থাকে না।