সম্প্রতি ব্রাজিলের (Brazil) ক্রেতা সুরক্ষা বিভাগ ‘প্রোকন-এসপি’ অ্যাপলকে ২০ লক্ষ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১৭ কোটি টাকা) জরিমানা করেছে। অ্যাপেলের বিরুদ্ধে আইফোন ১২’র ক্ষেত্রে ‘বিভ্রান্তিমূলক বিজ্ঞাপন এবং চার্জার ছাড়া ডিভাইস বিক্রির’ অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বছর অক্টোবরে অ্যাপেল তাদের ফ্ল্যাগশিপ ফোন, ‘আইফোন ১২’ সিরিজ বাজারে আনে। যেখানে ফোনের বাক্সে কোনও চার্জার রাখা হয়নি। রাখা হয়নি হেডফোনও। শুধু জ্যাকবিহীন একটি চার্জিং কেবল থাকছে। ল্যাপটপ বা অন্য কোনও ডিভাইস থেকে ওই জ্যাকের মাধ্যমে আইফোন চার্জ করা যাবে। আর যদি আলাদা করে প্রথাগত চার্জার কিনতে হয়, তবে তার জন্য প্রায় আতিরিক্ত ২ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। এই কারণে অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করেছে। কারণ চার্জার ছাড়া একটি ফোন ব্যবহার করা খুব সমস্যার। আর চার্জার যখন একটি ফোনের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী, সেখানে তা আলাদা করে কিনতেই বা হবে কেন!
অ্যাপেলের দাবি, নতুন ফোনের জন্য চার্জার কম উৎপাদনের ফলে ২০ লাখ মেট্রিক টন কার্বন কম করা গিয়েছে। যা সাড়ে ৪ লাখ গাড়ি থেকে উৎপাদিত কার্বনের সমান। অক্টোবরেই অ্যাপলের ভিবি লিজা জ্যাকসন জানিয়েছিলেন, পরিবেশ বাঁচানোর লক্ষ্যেই তাঁরা চার্জার ছাড়া আইফোন উৎপাদন করছেন।
‘আইফোন ১২ মিনি’র যে মডেলটির দাম আমেরিকায় ৭২৯ ডলার তারই দাম ব্রাজিলে পড়ে ১২০০ ডলার। কিন্তু ব্রাজিলের এই চার্জার সংক্রান্ত মামলার সময় ক্রেতা সুরক্ষা বিভাগ ‘প্রোকন-এসপি’র তরফে অ্যাপলকে প্রশ্ন করা হয়, ফোনের বাক্সে চার্জার বিক্রি না করে দাম কি কমানো হয়েছে? সে প্রশ্নের কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি অ্যাপেলের কাছ থেকে। তার পর ‘প্রোকন-এসপি’র এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর ফার্নান্ডো ক্যাপেজ জানিয়েছেন, অ্যাপেলের বোঝা উচিত ব্রাজিলে ক্রেতা সুরক্ষা আইন খুব কঠোর। আর অ্যাপেলের সেই আইনকে সম্মান করা উচিত।
এখন দেখার বিষয় ভবিষ্যতে অ্যাপেল ফোন বিক্রির ক্ষেত্রে এই চার্জার বিহীন নীতি নিয়েই এগোয় নাকি ব্রাজিলের জন্য অন্য কোনও পন্থা নেয়। কারণ ব্রাজিল বাজার হিসাবে বেশ বড়। আবার চিনের জন্য যেমন অ্যাপেল আলাদ করে আইফোন উৎপাদন করে। আমেরিকা-সহ গোটা বিশ্বে একটি ফিজিক্যাল সিম এবং একটি ই-সিম যুক্ত আইফোন বিক্রি হয়। সেখানে চিনের ক্ষেত্রে দু’টিই ফিজিক্যাল সিম যুক্ত ফোন বিক্রি হয়। তাই হতেই পারে ব্রাজিলে ফোন বিক্রির ক্ষেত্রে চার্জারবিহীন নীতি বর্জন করতে পারে অ্যাপেল।