ছবিঃ সংগৃহীত
মানুষের জীবনে যখন যা প্রয়োজন তখন তা-ই উদ্ভাবন করছে। তবে এখন পর্যন্ত যত আবিষ্কার হয়েছে, এর অন্যতম একটি হলো প্লাস্টিক। প্লাস্টিক হলো এমন একটি উপাদান, যা সিনথেটিক বা অর্ধসিনথেটিক জৈব যৌগের তৈরি উপাদান; যা টেকসই, নমনীয়, শক্তিশালী ও হালকা। বর্তমানে প্লাস্টিক ছাড়া এক মুহূর্ত জীবনধারণ অসাধ্য। দিনের শুরুতে চায়ের কাপ থেকে রাতে ঘুমানো পর্যন্ত প্লাস্টিক নিত্যসঙ্গীতে পরিণত হয়েছে। মানুষের সব রকম চাহিদা মেটাচ্ছে প্লাস্টিক ও প্লাস্টিকের উৎপাদিত পণ্য।
এই প্ল্যাস্টিক যেমন আমাদের দৈনন্দিন জীবন কে সহজ করে দিচ্ছে ঠিক তেমনি এর ব্যবহারের একটু ব্যতিক্রম আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে।
তাই এর ব্যবহার জেনে নেয়া অতিব জরুরী । প্লাস্টিক বোতলের তলায় থাকা ত্রিকোণ চিহ্নের মানেটা বুঝে নিলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতে পারে নিমেষে।
প্লাস্টিকের বোতলের নিচের চিহ্ন
ত্রিকোণ চিহ্ন— এটা আসলে প্লাস্টিক বোতলের চারিত্রিক ইনডেক্স। এই চিহ্নটা থাকলে বোঝা যায় বোতলটি বিধিসম্মতভাবে তৈরি। কিন্তু, বোতলটা ব্যবহারের কতটা নির্ভরযোগ্য বা কী ধরনের জিনিস তাতে রাখা যাবে, তা ত্রিকোণ চিহ্নের মধ্যে থাকা সংখ্যা দ্বারা বোঝা যায়।
ত্রিকোণের মাঝে ১ সংখ্যা থাকলে— এর মানে বোতলটি একবারই মাত্র ব্যবহার করা যাবে এবং বোতলটিতে পলিথিলিন টেরেপথ্যালেট প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে। এই ধরনের বোতল বহুব্যবহারে স্বাস্থ্যের পক্ষে হানিকারক।
ত্রিকোণের মধ্যে ২ সংখ্যা থাকলে— এই ধরনের প্লাস্টিক বোতলে ঘন পলিথিন ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত শ্যাম্পু বা ডিটারজেন্ট রাখার ক্ষেত্রে এই ধরনের বোতল ব্যবহার হয়।
ত্রিকোণের মধ্যে ৩ সংখ্যা থাকলে— এই ধরনের বোতল বেশি ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ, এই বোতল তৈরি হয় ‘পোলিভিনিল ক্লোরাইড’ বা ‘পিভিসি’ থেকে। এতে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ‘পিনাট বাটার’ রাখতে এই বোতল ব্যবহার করা হয়।
ত্রিকোণের মধ্যে ৪ সংখ্যা থাকলে— এই ধরনের প্লাস্টিক বহু ব্যবহারের উপযোগী। বিশেষ করে, প্লাস্টিকের প্যাকেটে এই চিহ্ন প্রচুর দেখা যায়। খুব দামি বোতলে এই চিহ্ন থাকে।
ত্রিকোণের মধ্যে ৫ সংখ্যা থাকলে— এই ধরনের প্লাস্টিক একদম নিরাপদ এবং ব্যবহারের যোগ্য। আইসক্রিম কাপ বা সিরাপের বোতল অথবা খাবারের কন্টেনারে এই ধরনের চিহ্ন দেখা যায়।
ত্রিকোণের মধ্যে ৬ অথবা ৭ সংখ্যা থাকলে— প্লাস্টিকের রেড কার্ড বলা হয় একে। এই ধরনের প্লাস্টিক মারাত্মক রকমের ক্ষতিকারক। কারণ এই ধরনের প্লাস্টিক তৈরি হয় পলিস্টিরিন এবং পলিকার্বনেট বিসফেনল-এ। এটা মানুষের মধ্যে হরমোন সমস্যা তৈরি করে। ক্রমাগত এই ধরনের প্লাস্টিকের ব্যবহার ক্যানসারের প্রবণতা বাড়ায়।
তাই এই ধরনের প্ল্যাস্টিক পণ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের আরো বেশি সচেতন হওয়া জরুরী।