জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে মজুরী বৈষম্য এর গড় ২১.২ শতাংশ যেখানে বাংলাদেশে মজুরী বৈষম্য গড় ২.২ শতাংশ(২০১৯ ) । এটা খুব অনুপ্রেরণাদায়ক যে, বাংলাদেশ বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা মজুরির ব্যবধান ইতিবাচক।
কর্মক্ষেত্রে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং বেতনপ্রাপ্ত চাকুরীতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নের প্রচেষ্টা, অথবা উদ্যোক্তা, ক্ষুদ্র ঋণ এবং শিক্ষার জন্য অর্থায়নে প্রবেশাধিকার বিস্তৃত করার প্রচেষ্টা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, “ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট এন্ড সোশ্যাল আউটলুক ট্রেন্ডস ২০২০” এর একটি প্রতিবেদনে, ২০১৯ সালে নারীদের বেকারত্বের হার আগের বছরের ৬.৬ শতাংশ থেকে ৬.২ শতাংশে নেমে এসেছে। শ্রম বাজারে নারীদের অংশগ্রহণ 2019 সালে 36.3% ছিল, যেখানে চাকরির বাজারে পুরুষদের অংশগ্রহণ 81.4% ছিল।
গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০২০ অনুযায়ী, বাংলাদেশে নারী সংখ্যাগরিষ্ঠ মালিকানাধীন কোম্পানির সংখ্যা মাত্র ১.৭০ শতাংশ, যেখানে নারী শীর্ষ ব্যবস্থাপকদের সংখ্যা ৪.৮০ শতাংশ।
নিয়োগকর্তারা বলছেন যে তারা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত যে একটি কর্মক্ষেত্র বৈষম্যমুক্ত।
তাই বলে যে মজুরী বৈষম্য দূর হয়ে গিয়েছে টা কিন্তু নয় ,১৬ জানুয়ারি, ২০১৯ তারিখে প্রকাশিত ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদনে জানা যায় যে লালমনিরহাট জেলার ইটভাটার নারী শ্রমিকরা একই কঠোর পরিশ্রম সত্ত্বেও তাদের পুরুষ সহকর্মীদের অর্ধেক মজুরি পাচ্ছেন। জেলার ৪৭টি ইটভাটার সকল মহিলা শ্রমিকদের জন্য পরিস্থিতি একই রকম। এটি দেশব্যাপী পরিস্থিতির মোটামুটি প্রতিনিধি।
প্রতিবেদনে জানা গেছে যে নারীরা কম মজুরি পাচ্ছে (একজন পুরুষ শ্রমিক প্রতিদিন ৮০০ টাকা পায়, একজন মহিলা শ্রমিক পুরুষদের চেয়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা পায়) কারণ ইটভাটার মালিকরা খুব ভালো করেই জানে যে এই মহিলাদের জীবিকা উপার্জনের কোন বিকল্প উপায় নেই। এটা জঘন্য।
তারপরেও এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে তার অগ্রগতি ও সাফল্য উদযাপন করছে, তবে নারীদের অর্থনৈতিক অর্জনত্বরান্বিত করার জন্য আরো অনেক কিছু করতে হবে যা অবশেষে দেশের অগ্রগতি, যৌথ সমৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে।