ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: দৈনন্দিন জীবন যাপনের জন্য অপরিহার্য নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হুহু করে বাড়ছে জরুরি প্রয়োজনীয় ঔষধের দাম। এই দৌড়ে পেরে উঠছে না মানুষ। দেশের শীর্ষ ছয় প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত ২৩৪টি জীবন রক্ষাকারী ঔষধের দাম ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, নির্ধারিত দরের চেয়ে বাজারে অনেক ঔষধ বেশি দামেও কেনাবেচা চলছে।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শীর্ষ ছয় কোম্পানির ঔষধের দাম সর্বোচ্চ বেড়েছে। সবার শীর্ষে রয়েছে অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড। তারা বাড়িয়েছে ৫২টি ঔষধের দাম। তাদের ঔষধের দাম সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।
ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যাস লিমিটেড ৪৭টি ঔষধের দাম বাড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ঔষধের দাম সর্বোচ্চ ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ৪৬টি ঔষধের দাম বাড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ঔষধ সর্বোচ্চ ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ৩৯টি ঔষধের দাম ২৮ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ৩৬টি ঔষধের দাম ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ১৪টি ঔষধের দাম ৪১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। আরও ১০টি কোম্পানি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে দাম বাড়ানোর আবেদনপত্র জমা দিয়েছে। কোনো কোনো কোম্পানি এমনকি দাম না বাড়ালে উৎপাদন বন্ধেরও হুমকি দিয়েছে।
এক্ষেত্রেও দাম বাড়ানোর অজুহাত হিসেবে কোম্পানিগুলো বলেছে, করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, ডলার সংকট, এলসি জটিলতা, গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোসহ সরবরাহ সমস্যা, মোড়ক, পরিবহন, বিপণন ব্যয় বৃদ্ধি ইত্যাদি।
বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ২১৪টি কোম্পানি ঔষধ উৎপাদন ও বিপণন করছে। কোম্পানিগুলো দেড় হাজার জেনেরিক নামের ঔষধ তৈরি করে, যেগুলো প্রায় ৩১ হাজার ব্র্যান্ড নামে বিপণন করা হয়। দেশে অত্যাবশ্যকীয় তালিকায় ২১৯টি ঔষধ রয়েছে।
২০২২ সালের জুলাইয়ে অত্যাবশ্যকীয় ৫৩টি ঔষধের দাম বাড়িয়েছিল সরকার। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় তালিকাভুক্ত ১১৭টি জেনেরিক নামের ঔষধের দাম নির্ধারণ করে ঔষধ প্রশাসন। বাকিগুলোর দাম উৎপাদনকারী ও আমদানিকারকরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। দর নির্ধারিত হয় ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাবনার ভিত্তিতে।
আমদানি করা ঔষধের দামের ওপর কারও হাত নেই। যে যার মতো দামে বিক্রি করছে। তবে ঔষধ কোম্পানিগুলোর সংগঠনের অভিযোগ, ঔষধ তৈরির কাঁচামাল তাদের হাতে নেই। এক্ষেত্রে বড় ৫০টি কোম্পানিকে ঔষধের কাঁচামাল তৈরির জন্য বলতে হবে, শর্ত দিতে হবে।
শরীর খারাপ হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার আগে অনেকেই চেনা ঔষধে ভরসা রাখেন। গুরুতর অসুখ না করলে দোকান থেকে ঔষধ কিনে খেয়েই সেরে ওঠা যায়। যে কারণে, জরুরি কিছু ঔষধ আগেভাগে বাড়িতে মজুতও করে রাখেন অনেকে। বাজারে কোনো কোনো ঔষধের দাম ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ছয় টাকার ট্যাবলেটের দাম হয়েছে ৯-১০ টাকা পর্যন্ত। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রোগীদের সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে ঔষধের এই মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি যৌক্তিক করা প্রয়োজন।
খুচরা বাজারে ঔষধের দাম বৃদ্ধিতে অভিনব পদ্ধতি বেছে নিয়েছে উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো। তারা প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ফার্মেসি মালিকদের মুঠোফোনে বার্তা দিয়ে ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। প্রায় এক বছর ধরে একাধিক প্রতিষ্ঠান বিপণন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দাম বাড়ালেও কিছুই জানে না সরকারের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
আকস্মিক দাম বাড়ালে অনেক রোগী ঔষধ কিনতে পারবে না। আর ডোজ সম্পূর্ণ না করলে শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। বলা হচ্ছে, পরবর্তী মহামারি অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) এর কারণেই হবে। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স মানবজাতির জন্য মহাবিপর্যয়। জনস্বাস্থ্যের শীর্ষ ১০টি হুমকির মধ্যে একটি হলো অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর)।
অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের ফলে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেসব কারণে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো পুরো কোর্স শেষ না করে মাঝপথে খাওয়া বন্ধ করা ও বিনা প্রেসক্রিপশনে ঘনঘন অ্যান্টিবায়োটিক সেবন। সদ্য পাশকৃত ‘ঔষধ ও কসমেটিকস আইন, ২০২৩’-এ প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানার যে আইনি বিধান রয়েছে তা যথাযথ প্রয়োগ সময়ের দাবি। অপ্রয়োজনীয় ঔষধ বাদ দেওয়ার জন্য কমিটি করতে হবে।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপে দেখা যায়, বিদেশে পর্যটক হিসেবে বাংলাদেশের নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি সাড়ে ২৯ শতাংশ চিকিৎসা বাবদ ব্যয় করেন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশের বাইরে এই ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। বছরে ৬-৭ লাখ রোগী শুধুমাত্র ভারতে যায়।
প্রতি বছর বাংলাদেশি রোগীদের ভারতমুখী স্রোত বেড়েই চলেছে। হিসাবে দেখা গেছে, তারা খরচ করেছেন আনুমানিক পাঁচ হাজার কোটি টাকা। এর কারণ দেশের চিকিৎসা সেবায় জনগণের আস্থাহীনতা, অরাজক অবস্থা, নিম্নমানের সেবা ও উচ্চ খরচ। ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর দাম বাড়ার কারণে রোগীপ্রতি মাসিক খরচ বেড়েছে দুই থেকে চার হাজার টাকা, যা অনেকের পক্ষেই বহন করা সম্ভব হচ্ছে না।
ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ব্যয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে অষ্টম স্থানে। এখানে রোগ শনাক্ত হওয়া থেকে শুরু করে পরবর্তী চিকিৎসার পুরো ব্যয় বহন করতে হয় রোগীকেই। ফলে অনেক রোগী চিকিৎসার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারে না। চিকিৎসার বাইরে থাকা রোগীরা ডায়াবেটিস ছাড়াও দ্রুত অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়। এই অবস্থায় উচ্চমূল্য জোগাড়ে ব্যর্থ হয়ে অনেক রোগী কষ্ট আর দীর্ঘশ্বাস চেপে ফার্মেসির সামনে থেকে শূন্য হাতে ফিরছেন। কেউ কেউ সামান্য ঔষধ কিনলেও বাকিগুলো খাওয়া ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ঔষধসেবন ছেড়ে দিলে দীর্ঘমেয়াদে শারীরিক জটিলতার সৃষ্টির আশঙ্কা থাকে, যা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় সুদূরপ্রসারী চ্যালেঞ্জ বাড়াবে। উল্লেখ্য, সরকারি স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মতে, দেশে বর্তমান একজন রোগীর মোট চিকিৎসা ব্যয়ের মোট ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ ব্যয় হয় ঔষধে। ফলে, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির এই দুঃসময়ে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ সহজেই অনুমেয়, বিশেষ করে করোনা ও ডেঙ্গুর সংক্রমণ যখন বাড়ছে। এতে বিপর্যয়মূলক স্বাস্থ্য ব্যয়ের মুখোমুখি হয়ে বছরে ৮৬ লাখ মানুষ দারিদ্র্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছেন। এই ধারা বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে অপ্রত্যাশিত রোগব্যাধি ও মৃত্যু বাড়বে।
এই খাতে তিনটি পক্ষ রয়েছে। একটি ঔষধ কোম্পানি, অন্যটি ঔষধ প্রশাসন এবং আরেকটি ফার্মেসি-সংশ্লিষ্টরা। দাম নিয়ন্ত্রণে ঔষধ প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকা ধরে দেশে অত্যাবশ্যকীয় ঔষধের তালিকা বড় করা উচিত। যেটির মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারকে নজরদারি বাড়াতে হবে। বাকিগুলো বিক্রিতে নীতিমালা অনুসরণে বাধ্য করতে হবে।
ঔষধের গুণগত মান না বাড়িয়ে কোম্পানিগুলো যথেচ্ছ দাম বাড়াচ্ছে সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে। এর পরিবর্তে ঔষধের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে চিকিৎসক উপঢৌকন এবং ফার্মেসিগুলোর কমিশন বাণিজ্য বন্ধ করে ঔষধের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ঔষধের বিজ্ঞাপন খরচ কমিয়ে বাড়তি দাম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে নেই নিয়মিত নজরদারি। এই সুযোগে ফার্মেসি মালিকরা বেশি দাম নিচ্ছেন। উচ্চমূল্যের পাশাপাশি আছে ভেজাল ঔষধ। মান নিশ্চিত করতে এই বছরের মধ্যে লাইসেন্সবিহীন দেশের সব ফার্মেসি বন্ধ করতে হবে। ঔষধের বাজার ঘিরে নৈরাজ্য থামানো যাচ্ছে না। ঔষধের মোড়কের গায়ে ঔষধের জেনেরিক ও ট্রেড নাম সমান হরফে লেখা থাকতে হবে।
ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কেনা যায়, এমন ঔষধের সংখ্যা কমাতে হবে। প্রতিটি ঔষধের দোকানের অন্তত দুজন লোককে ঔষধ ও ঔষধ বিপণনের ওপর তিন মাসের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এতে দুই লাখের বেশি শিক্ষিত বেকারের কর্মসংস্থান হবে। এর ফলে ঔষধ বিক্রিতেও সুষ্ঠুতা আসবে। মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে।
সব ঔষধের দর সরকার নির্ধারিত ফর্মুলার ভিত্তিতে নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এরপরও ঔষধের দাম বাড়বে। তবে সেটা হবে নিয়ন্ত্রিত। এখন ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মতো ঔষধের দাম বাড়াচ্ছে। এটা নিয়ন্ত্রণ জরুরি। এই ক্ষেত্রে সরকারের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। তা না হলে দেশের চিকিৎসা খাত নিম্নবিত্ত মানুষের আওতার বাইরে চলে যাবে এবং যার সার্বিক প্রভাব জনস্বাস্থ্যের ওপর পড়বে।
একদিকে যেমন প্রায় সব রকম ঔষধের চাহিদা ও দাম বেড়েছে, অন্যদিকে এই সুযোগে নকল ও ভেজাল ঔষধে সয়লাব হয়েছে বাজার, ঔষধের দোকান ও ফার্মেসিগুলোয়। ইতিমধ্যে হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে নকল ও ভেজাল ঔষধ প্রস্তুত এবং বাজারজাতকরণের অপরাধে ২৮টি কোম্পানি নিষিদ্ধ করেছে। তারপরও দেখা যাচ্ছে যে, নকল ও ভেজাল ঔষধ তৈরির দৌরাত্ম্য কমেনি একটুও। সেই অবস্থায় এসব কোম্পানির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ সময়ের অনিবার্য দাবি।
বাংলাদেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে যে কয়েকটি খাত নিয়ে গর্ববোধ করতে পারে ঔষধশিল্প তার মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় ৯৮ শতাংশ ঔষধ উৎপাদিত হয় দেশেই। বিশ্বের ১৪৮টি দেশে ঔষধ রপ্তানি করে বাংলাদেশ।
ঔষধ একটি স্পর্শকাতর বিষয়। মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্নটি এর সঙ্গে জড়িত ওতপ্রোতভাবে। পাশাপাশি খাদ্য ও পথ্যের বিষয়টিও প্রসঙ্গত উঠতে পারে। ভেজাল খাদ্য যেমন মানুষের জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে; অনুরূপ ভেজাল ও নকল-মানহীন ঔষধ বিপন্ন করে তুলতে পারে মানুষের জীবনকে। আর তাই ঔষধের মান ও দাম নিয়ে হেলাফেলা তথা শৈথিল্য প্রদর্শনের বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। উন্নত বিশ্বে ঔষধের দাম ও মান নিয়ন্ত্রণ করা হয় কঠোরভাবে। ঔষধের দাম ও মান নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ সময়ের দাবি।
আমরা মনে করি, সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ঔষধ প্রশাসন জীবন রক্ষাকারী ঔষধের মূল্য সাধারণ রোগীদের নাগালের মধ্যে রাখতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
ড. মো. আনোয়ার খসরু পারভেজ; অধ্যাপক ও গবেষক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
সৌজন্যে, ঢাকা পোস্ট।