দেশে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক দামের সাথে বোতলজাত লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম ভোক্তাপর্যায়ে পুনর্নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। সরকারি পর্যায়ে প্রতি সাড়ে ১২ কেজি এলপি গ্যাসের মূল্য ৫৯১ টাকা এবং বেসরকারি পর্যায়ে প্রতি সাড়ে ১২ কেজি মূল্য সংযোজন কর সহ গ্যাসের মূল্য ৯৭৫ টাকা। সোমবার (১২ এপ্রিল) এ দামের কথা জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে।
রেটিকুলেটেড পদ্ধতিতে সরবরাহ করা বেসরকারি এলপিজির মূসকসহ নতুন দাম হবে প্রতিকেজি ৭৯ টাকা ০১ পয়সা। আর বেসরকারি বোতলজাত এলপিজির প্রতিকেজির মূল্য ধরা হয়েছে মূসকসহ ৮১ টাকা ৩০ পয়সা। ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি লিটার অটোগ্যাসের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৭ টাকা ৯২ পয়সা।
প্রথমে গনশুনানীর মাধ্যমে মূল্য নির্ধারন করা হলেও পরবর্তীতে আরবিট্রারি কমিটি গঠন করে এমন মূল্য নির্ধারণ পুরোপুরি প্রশ্নবিদ্ধ একটি সিদ্ধান্ত বলে ভোক্তাকন্ঠকে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. এম শামসুল আলম।
নতুন নির্ধারিত এই মূল্যহার ও ভোক্তার স্বস্তি নিয়ে তিনি বলেন, ‘মূল্য পুননির্ধারণের কথা ছিল তিন মাস পূর্বেই । কিন্তু সেই সময়ে মূল্যনির্ধারণ না করে বিইআরসি তিন মাস পরে এসে নির্ধারিত মূল্য তুলে ধরেন। তিন মাস পূর্বে এই মূল্যনির্ধারণ করা হলে মূল্য নির্ধারিত হতো ৮৬৬ টাকা। তিন মাস পরে এসে এই মূল্য বাড়িয়ে বেসরকারি পর্যায়ে ৯১৫ টাকা নির্ধারণ করা অযোক্তিক। এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে তারা আন্তর্জাতিক বাজারের চিত্র তুলে ধরেন। এতে মূলত বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সমন্বয়হীনতা প্রমাণ করে’। এই সমন্বয়হীনতা গ্রাহক পর্যায়ে চরম প্রভাব ফেলবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, বিইআরসির এই পদক্ষেপে ভোক্তাস্বার্থ লঙ্ঘিত হয়েছে। যদি জ্বালানির দাম যদি হঠাৎ বেড়ে যায়, তাহলে সামগ্রিক অর্থনীতি তার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে না। জ্বালানির দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যায় পরিবহন, সার ও বিদ্যুতের দাম। এভাবে সমগ্র উৎপাদন ব্যয় যেমন বৃদ্ধি পায় সেই সাথে জীবন যাপনের ব্যয় বেড়ে যায়। এর ফলে রপ্তানিমুখী পণ্যগুলো বিদেশের বাজারে বিরাট চাপের মুখে পড়ে, অনেকে বাজার হারায়। এতে দেশের অভ্যন্তরে মূল্যস্ফীতির চাপ সৃষ্টি হয়।
ভোক্তাদের স্বার্থের কথা ভেবে দ্রুত এই সিদ্ধান্ত বাতিলের আহবান জানান এই বিশেষজ্ঞ।