ভোক্তাকণ্ঠ রিপোর্ট: দেশে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভোক্তা অধিকার তছনছ হয়ে গেছে বলে মনে করছেন কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম।
বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার দায় দিয়ে গতকাল (শুক্রবার) রাত ১০ টার দিকে তেলের দাম বাড়িয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। তেলের নতুন দর শুক্রবার রাত ১২ টা থেকেই কার্যকর করা হয়েছে।
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় ক্যাবের এ সদস্য বলেন, আশঙ্কা ছিল তেলের দাম বাড়বে, কিন্তু এটা যে এতোটা বাড়বে সে ধারণা কারোরই ছিলো না।
তিনি আরো বলেন, দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম তিন থেকে পাঁচ টাকা বাড়লেই সংসারের খরচ নতুন করে সাজাতে হয়, সেখানে এক লাফে তেলের দাম এতোটা বেড়ে যাওয়ায় মানুষের জীবনে যে প্রভাব পড়বে, অনেকে তা বুঝেই উঠতে পারছেন না।
এ সময়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ শামসুল আলম আরো বলেন, আইএমএফের ঋণ পাওয়ার শর্ত ছিল ঘাটতি সমন্বয়। এটা করতে গিয়ে তেলের দাম বাড়িয়ে জনগণের ওপর যে আঘাত আনা হয়েছে, তা সিডর-আইলাকেও হার মানায়।
ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ক্যাবের এ সদস্য আরো বলেন, দুর্নীতি ও অপচয় বন্ধ করেও ঘাটতি সমন্বয় করা যেত। তবে সরকার সে পথে হাঁটেনি। আবার গণশুনানি করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হলে তাও কিছুটা সহনীয় থাকত। কিন্তু এখন যে টর্নেডো চালিয়ে দেওয়া হলো জনগণের ওপর, তাতে ভোক্তার অধিকার তছনছ হয়ে গেছে।
এর আগে ভোক্তাকণ্ঠকে অধ্যাপক শামসুল আলম বলেছিলেন, জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য ডিজেল চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। এতে ডিজেল সাশ্রয় হচ্ছে। কিন্তু দেশের ধনীক শ্রেণীর লোকেরা ডিজেল ব্যাবহার করে ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ব্যাবহার করছে। সেখানে জেনারেটর চালাতে ডিজেল ব্যাবহার করা হচ্ছে। কিন্তু লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষের।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার পর অর্থাৎ শনিবার থেকে ৮৯ টাকার অকটেন ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা, ৮৬ টাকার পেট্রোল ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা, ৮০ টাকার ডিজেল ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ এবং ৮০ টাকার কেরোসিন ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। সরকারি সিদ্ধান্তেই তেলের এ বর্ধিত দাম নির্ধারণ করা হয়।
উল্লেখ্য, করোনার পরপরই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে দেশের বাজারে অনেক কিছুরই দাম বাড়ছিল। এর মধ্যে ডলারের দাম বাড়তে শুরু করলে আরেক দফা ধাক্কা লাগে বাজারে। বিশেষ করে যেসব জিনিস আমদানি করতে হয়, তার প্রত্যেকটিতে বড় অংকের মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। এ অবস্থায় জ্বালানি তেলের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে, তাতে জনসাধারণের খরচ অনেক বেড়ে যাবে।