অধ্যাপক এম. এম. আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
BERC is a trilateral body, যেখানে গভমেন্ট আছে, প্রাইভেট সেক্টর আছে মানে ট্রাইলেটারাল প্রবলেম সলভ করার বডি। গভমেন্টের কিছু বক্তব্য থাকবে একটা স্ট্যাকহোল্ডার হিসাবে, প্রাইভেট সেক্টরের কিছু স্ট্যাকহোল্ডার হিসাবে থাকবে এবং কনজ্যুমারের একটা স্ট্যাকহোল্ডার হিসাবে বক্তব্য থাকবে। গণশুনানির মাধমে সেসব ডিবেটগুলো রিসলভ করবে বাক। বাক এগুলো করতে পারছেনা। কেন করতে পারছেনা? ফান্ডামেন্টাল কজ হচ্ছে Government is preventing BERC to play its role. কেন গভমেন্ট এটা করছে? কারণ গভমেন্ট আসলে নিউ লিবারিজমে বিশ্বাস করে যেটার অর্থ হচ্ছে বাজারে হস্তক্ষেপ করা উচিত না। প্রাইভেট সেক্টরকে প্রমোট করা হচ্ছে এবং গভমেন্ট সেখানে যত কম হস্তক্ষেপ করবে ততই মঙ্গল মানুষের। এই ফিলোসফিতে গভমেন্টের প্রধান লোকের বিশ্বাস করে।
আমি এজ অ্যা ইকোনোমিস্ট গভমেন্টের সামগ্রিক আচরণ দেখে এটা নিশ্চিত। সুতরাং গভমেন্টের কাছে ক্ষমতাটা যতদিন থাকবে, বাক যতদিন গভমেন্টের ক্ষমতার বাইরে গিয়ে আচরণ করতে না পারবে ততদিন কনজ্যুমারের যে সোশ্যাল রাইট সেটা কার্যকরী হবেনা। এখন সেটার জন্য আইন পরিবর্তন করে মানে বাককে ক্ষমতা দিতে হবে – এই হলো মূল কথা। কিন্তু বাককে ক্ষমতা দিলেও গভমেন্ট যে আইনগুলোর মধ্যে যতটুকু ক্ষমতা আছে সেটুকু এলপিজির ক্ষেত্রে আমরা দেখলাম নয় সাল থেকে একুশ সাল পর্যন্ত লেগে গেলো সেই ক্ষমতা অনুযায়ী করে তারপরে একটা বললো তাও এখনো এটা সলভ হয়নি। এখনও মারামারি চলছে এবং গভমেন্টও কিছু বলেনা, প্রাইভেট সেক্টরও কিছু বলেনা এবং সবসময় দেখা যাচ্ছে গভমেন্টের থেকেও মূল পাওয়ারফুল হচ্ছে প্রাইভেট সেক্টর। প্রাইভেট সেক্টর যেটা বলে সেটাই আল্টিমেটলি প্রিভেইল করে, গভমেন্টেরটাও প্রিভেইল করে না, কনজ্যুমারেরটাও প্রিভেইল করেনা। তাহলে মানে আমরা যদি আধুনিক রাষ্ট্রের দিকে তাকাই আধুনিক রাষ্ট্রের তিনটা বডি থাকে। একটা লেজিসল্যাটিভ বডি – যারা আইন প্রনয়ণ করে সেটা হচ্ছে সংসদ। আরেকটা থাকে এক্সিকিউটিভ বডি – সেটা হলো আমলা। বলা হয় যে, বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম দেশ যার মালিক হচ্ছে জনগণ। তাহলে আমরা যে আইন প্রনয়ণকারী কমিটির সংসদ বানালাম সেই সংসদের দায়িত্ব হচ্ছে আমাদের ইচ্ছা কার্যকরী করা।
আমাদের এখানে দেখা যাচ্ছে সংসদও ব্যবসায়ীরা দখল করে নিয়েছে। সংসদও আমলারা দখল করে নিয়েছে। আর ব্যবসায়ীরা যতটুকু দখল করেছে তারপরে যখন তারা একটা কিছু চাপ দেয় তখন সেটা আইনের ফাঁকে – আইনটা যদি বেকায়দা হয় তাহলে এটা আইনের ফাকে আটকে যাবে। আর আইন কার্যকরী করার আমলারা যদি প্রতিকুল থাকে তাহলেও আটকে যাবে। এই জটিলতার মধ্যে বাংলাদেশ আছে এটা ফান্ডামেন্টাল কাঠামোগত প্রবলেম। আর তবুও একটা সুযোগ তবুও কনজ্যুমারের নিভু নিভু প্রদ্বীপের মতো আছে। যে আচ্ছা – একটা গণশুনানি হলে তো অন্তত কথাগুলো বলতে পারবো। আর আরেকটা সুযোগ আছে। আচ্ছা কথাগুলো বলেও যদি কোনো মীমাংসা না হয় অন্তত কোর্টে তো যেতে পারবো। কোর্টে যেয়ে তারপরে কোর্ট যখন বলে এইবার গণশুনানি করো, তখন বাক গণশুনানি করে। তারমানে বাক-এর দাঁত-দৌত নাই – এখন পর্যন্ত কোর্টের যতটুকু দাঁত-দৌত আছে সেটুক ব্যবহার করে জনগণ তার স্বার্থ উদ্ধার করছে। বাংলাদেশের ক্ষমতা কনজ্যুমারের হাতে নাই, আছে ব্যবসায়ীদের হাতে, আছে অসৎ আমলাদের হাতে, আছে অসৎ রাজনীতিবিদদের হাতে। এই ফান্ডামেন্টাল কারণে বাক কার্যকরী হচ্ছেনা। আপনি যদি আইন বদলান আইন বদলালে এইটুকু করতে পারবেন যে আপনার কনজ্যুমারের ভয়েসটা উঠবে এবং কনজ্যুমারের ভয়েসটাও যখন ব্যর্থ হবে তখন আপনি কোর্টে যাবেন। কোর্ট থেকে যদি কোনোভাবে একটি রায় বের করতে পারেন তখন বাক মাথা ঘামাবে। একটা সিম্পল উদাহরন দেই – এটা একদম খুব সিম্পল একটা ইকোনোমিক্স সেটা হলো যদি আপনার পেট্রোলিয়ামের দাম বাড়ে যেটা আপনি ইম্পোর্ট করে আনছেন। সেটার দাম যদি আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ে কনজ্যুমারের বলার কিছু নাই। কারণ আন্তর্জাতিক কস্ট প্রাইজ বেড়ে গেছে। তার সাথে ট্রান্সপোর্ট কস্ট যোগ করে নায্য একটা দাম ঠিক করে সেই দামে আপনি কিনতে বাধ্য – ঠিক আছে? আপনাকে যদি আমি জিজ্ঞাসা করি দাম কমলে কী হবে? তাহলে আপনার একই যুক্তিতে বলা উচিত – দাম কমলে কস্ট প্রাইজ কমে যাবে। সুতরাং রিটেইল মার্কেটের দাম কমে যাবে। কিন্তু আমাদের দেশে তা হয়না।
আমাদের দেশের বাহিরে দাম বাড়লে দাম দ্রুত বেড়ে যায়। আর দাম কমলে সেটা সরকার রেখে দেয়। এমনকি সরকারও দাম বাড়ালে সেটা থেকে প্রফিট আর্ন করে, সেই প্রফিট আর্ন করে সে রেখে দেয়। কনজ্যুমার যখন বিপদে পড়ে তখন যে তাকে ওখান থেকে কিছু টাকা দিয়ে রক্ষা করবে সেটা করেনা। তার মানে কী? তার মানে Government is for himself, not for the consumers and government is for the businessmen, not for the consumers কারণ তাদের প্রফিটটা সুরক্ষিত হয়। আর ব্যবসায়ীদের ইন্টারেস্টটা সুরক্ষিত হয়। সুতরাং যতদিন পর্যন্ত না আপনি এই কাঠামোগত পরিবর্তন করে আর ঐটা তো মৌলিক পরিবর্তন, রাজনৈতিক পরিবর্তন – সেটা আপনি এখন পারছেন না পরিস্থিতির কারণে। এমন যদি হতো যে ভোটের একটা দাম আছে, কনজ্যুমাররাও তো ভোটার তাহলে আপনি পারতেন। কারণ তখন গভমেন্ট মাথা ঘামাতো যে আমি যদি এগুলো করি তাহলে পরবর্তী ইলেকশনে আমি ভোটে জিততে পারবো না। সুতরাং না জিততে পারলে তখন আমি কী করবো? সুতরাং কনজ্যুমারের স্বার্থ দেখতো। কিন্তু গভমেন্ট জানে যে ভোট কোনো ব্যাপার না। গভমেন্ট জানে যে আমি আমলাদের ঠিক রাখতে পারলে পুলিশ-এসপি, নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন অফিসার, এক্সিকিউটিভদের ঠিক রাখতে পারলে আমি জিতবো। সুতরাং কনজ্যুমারের ভয়েসটা তো আপনি এক্সিস্টিং স্টেইক স্ট্রাকচারে ঢুকাতে পারছেন না। এখনও একটু ক্ষীণ আশা যে কোর্টে গিয়ে যদি ঢুকাই – কারণ কোর্ট কিন্তু আর বরখাস্ত করতে পারেনা, কিসব আইন আছে যাতে কোর্টের একটা রিলেটিভ অটোনমি আছে।