গোলাম রহমান: সরকার পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলেই মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা রোধ করা যাবে না। যে কারণে বাজারে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে সেসব রোধেও উদ্যোগ নিতে হবে। বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সুদের হার এবং মুদ্রার বিনিময় হার ব্যবস্থাপনাকে সরকার নিয়ন্ত্রণ করলে দাম নিয়ন্ত্রণে সুফল পাওয়া যাবে না। এই বিষয়গুলো বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার আলু, ডিম, পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল ও চিনির যে নতুন দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশে এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে। তবে বাজারে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের এই উদ্যোগ ইতিবাচক। মনে রাখা প্রয়োজন, মুক্তবাজার অর্থনীতির বাস্তবতায় এটি সহজ নয়। এর জন্য অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন এবং পণ্যের সরবরাহব্যবস্থা যেন কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত না হয়; সরকারকে সেদিকে কঠোর নজরদারি করতে হবে।
কোনো ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠান যদি বাজার অস্থিতিশীল করার সঙ্গে জড়িত বলে নিশ্চিত হয় তবে ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রুততম সময়ে তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই দেশের ভোক্তারা সুফল পাবে। এটি করা না গেলে সরকারের এসব উদ্যোগ হবে কথার কথা বা লোক-দেখানো। এর আগেও সরকার পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু ভোক্তারা তার সুফল পায়নি।
বাজারে সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকারকে প্রয়োজনে নিত্যপণ্য আমদানি করতে হবে। আর এসব পণ্য টিসিবির মাধ্যমে সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
কারণ অসাধু ব্যবসায়ীরা কখনো ভোজ্যতেল, কখনো চিনি, কখনো পেঁয়াজ, আদা, ডিম, কাঁচা মরিচ ইত্যাদি পণ্যের সরবরাহে সংকট তৈরি করে হাজার হাজার কোটি টাকা ভোক্তার পকেট থেকে লুটে নিচ্ছেন। অনেক সময় সরকারের কিছু নীতিও অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে অতি মুনাফার সুযোগ করে দেয়।
সরকারের তদারকি সংস্থাগুলোর সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। আর বড় অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার নজিরও নেই বললে চলে। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এসব সীমাবদ্ধতা দূর করতে হবে।
সভাপতি, কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
সৌজন্যে, কালের কণ্ঠ।