গোলাম রহমান : বাজারে মূল্যস্ফীতির যে চাপ রয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সঠিক সময়ে সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সরকার নিজেই চাইছে না দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসুক। দেশের মানুষের কষ্টের মধ্যেও তাদের দুর্বল কার্যক্রম দেখে তাই মনে হচ্ছে। সরকার চাইলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারত। এ ক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছা প্রয়োজন। কিন্তু প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নিয়ে শুধু ঘোষণা দিয়েই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে সরকার।
বাজার সিন্ডিকেটের সঙ্গে সরকারদলীয় অনেক নেতা জড়িয়ে আছেন। চাইলে সরকার তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু সরকার নিজেই চাইছে না সিন্ডিকেট ভাঙুক। ফলে বাজার অস্থিতিশীল করতে দিন দিন সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছেন বাজার সিন্ডিকেট সদস্যরা। সুশাসন না থাকায় করপোরেটদের পাশাপাশি এখন ছোট ছোট ব্যবসায়ীও সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন পণ্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়াচ্ছেন।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দেশের অর্থনীতিবিদরা অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছেন। কিন্তু সরকার তা আমলে নেয়নি। সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার বাড়িয়ে সফলতা পেয়েছে। সুদহার বাড়াতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের অর্থনীতিবিদরা পরামর্শ দিয়ে আসছেন। কিন্তু শেষ সময়ে এসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহার বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে, তাও প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটা কম। অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, সুদহার আরও আগে বাড়ানো হলে টাকার প্রবাহ কমে আসত, মূল্যস্ফীতিও কমত। কিন্তু আমাদের সরকার তাদের কথা শুনছে না, বাংলাদেশ ব্যাংককেও স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিচ্ছে না। উল্টো বাংলাদেশ ব্যাংককে জিম্মি করে রেখেছে। এই মুহূর্তে যদি মূল্যস্ফীতি কমাতে হয় তাহলে অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনা করে ও বাংলাদেশ ব্যাংককে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে।
লেখক : সভাপতি, কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।