বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ (বিশেষ বিধান) আইন, বিইআরসি আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি, বিইআরসি আইন পরিবরর্তন, ভাড়া বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি এবং সুশাসন সংকট শিরোনামে সেপ্টেম্বর মাসের ২১ তারিখে কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর আয়োজনে অনলাইন নাগরিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনলাইন সভাটির সার্বিক সহযোগিতায় ছিল ক্যাবের মুখমাত্র ভোক্তাকণ্ঠ। অনলাইন নাগরিক সভায় দেশের সর্বস্তরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা অংশ নেয়। অনলাইন সভা সঞ্চালনা ও প্রবন্ধ উপস্থাপনায় ছিলেন ক্যাবের সংগঠক সৈয়দ মিজানুর রহমান। অনলাইন নাগরিক সভার বক্তাদের আলোচনা তুলে ধরা হলো।
সৈয়দ মিজানুর রহমান
সাংগঠনিক সম্পাদক
কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)
এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছেন খন্দকার আবু সালেক সুফি, অধ্যাপক বদরুল ইমাম, অধ্যাপক এজাজ হোসেন, অধ্যাপক শামসুল আলম, ডক্টর তুরিন আফরোজ, অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, অধ্যাপক এম এম আকাশ, অধ্যাপক আবুল বারাকাত, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, সুলতানা কামাল ও ক্যাবেরে সভাপতি গোলাম রহমান।
আজকে এই নাগরিক সভা ক্যাব আয়োজন প্রসঙ্গ হলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ বৃদ্ধি বিশেষ বিধান আইনের মেয়াদ বৃদ্ধি বিইআরসি আইন পরিবর্তন, রেন্টাল বিদ্যুৎ চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি এবং সুশাসন সংকট। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় দুই বছর মেয়াদে এই আইন ২০১0 সালে প্রণয়ন করা হয়। ভোক্তারা এই আইনকে দায় মুক্তি (ইনডেমনটি) আইন বলে থাকে। এই আইনের মেয়াদ প্রথমে দুই বছর, দ্বিতীয় বারে চার বছর, তৃতীয় বারে তিন বছর এবং এবারে পাঁচ বছর বৃদ্ধি করা হলো। বিনা দরপত্রে ভাড়া বিদ্যুৎ ক্রয়, দফায় দফায় অতিরিক্ত মূল্যে চুক্তি নবায়ন, বিদ্যুৎ আমদানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সঞ্চালন ও বিতরন অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প, গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন প্রকল্প, ইত্যাদি এই আইনের আওতায় বাস্তবায়ন হয়েছে, হচ্ছে এবং হবে। ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি এবং এর অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্প এ আইনের আওতায় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই আইনের আওতায় নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা দ্রুত অর্জন করার কথাও বলা হচ্ছে। জরুরি অবস্থায় মানবাধিকার সুরক্ষার আইনগুলো কার্যকর থাকেনা। যদি বলা হয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সংকটের কারণে এ-খাত জরুরী অবস্থায় ছিল, এই বিবেচনায় তা মোকাবেলার জন্য এই আইন। এই আইনের অভিঘাতে ভোক্তার জ্বালানী অধিকার সুরক্ষায় প্রণীত বিএসটিআই আইন, বিইআরসি আইন, সেডা আইন, প্রতিযোগিতা আইন এবং এ-সব আইনের আওতায় গঠিত সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ নিষ্ক্রীয় তথা অকার্যকর। এমনকি দুর্নীতি দমন কমিশনও এক অবস্থায় রয়েছে। ফলে সে অধিকার সুরক্ষায় ক্যাব উচ্চ আদালতের শরনাপন্ন হচ্ছে। সঠিক দামে, মানে ও মাপে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী পাওয়া ভোক্তার অধিকার। এ-আইনের আশ্রয়ে লুন্ঠনমূলক ব্যয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সরবরাহ করায় ভোক্তারা একদিকে সে-অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে এ-খাতে সুশাসন সংকট তীব্র হচ্ছে।
ভাড়া (রেন্টাল) বিদ্যুৎ ক্রয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি জরুরি সরবরাহ আইনের আওতায় ২০০৯ ও ২০১০ সালে বিনা দরপত্রে নির্মিত ৯৮৩ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতা সম্পন্ন ১২টি কেন্দ্রের বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি করা হয়। ফার্নেস ওয়েল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৫ বছর এবং ডিজেল ও গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৩ বছর মেয়াদের চুক্তি হয়। চুক্তির মেয়াদ কম হওয়ায় এবং প্রতিযোগিতা না থাকায় বিদ্যুতের ক্রয়মূল্য স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বেশী হয়। এই স্বল্প মেয়াদী বিদ্যুৎ কেন্দ্রই ভাড়া (রেন্তাল) ও দ্রুত ভাড়া (কুইক রেন্তাল) বিদ্যুৎ কেন্দ্র। পরবর্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায়। ফলে ঘন ঘন বিদ্যুতের দাম এবং সেই সাথে ভর্তুকিও বৃদ্ধি পায়। এখনও তা অব্যাহত। নির্মাণাধীন ও পরিকল্পনাধীন বড় বড় বিদ্যুৎকেন্দ্রসমূহ অস্বাভাবিক বিলম্ব হতে থাকে। এই অজুহাতে একদিকে নির্মাণ ব্যয় বেশি বেশি বাড়নো হয়। অন্যদিকে দ্রুত ভাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদও ভোক্তাদের আপত্তি উপেক্ষা করে বার বার বাড়ানো হয়েছে। চাহিদা স্বল্পতার কারণে বিদ্যমান বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতার অর্ধেকই অধিকাংশ সময় অব্যবহৃত থাকে। ২০২৫ সালে তা হবে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। ফলে বিদ্যুৎ রপ্তানী বাজার খোঁজা হচ্ছে। ২০২০ সালের ২০ সেপ্টম্বরে বিদ্যুতের মূল্য পরিবর্তন আদেশ জারি হয়। গণশুনানী মতে সে-আদেশের ৮ পয়েন্ট ১০ নম্বর উপানুচ্ছেদে তেলভিত্তিক ভাড়া ও দ্রুত ভাড়া (কুইক রেন্তাল) বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ পুনরায় বৃদ্ধিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। ইতোমধ্যে তেলভিত্তিক ৫৫৭ মেঘাওয়াট উৎপাদনক্ষমতা সম্পন্ন ৫টি ভাড়া এবং দ্রুতভাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ পুনরায় বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বিদ্যুৎ বিভাগ শুরু করেছে। তাতে বিইআরসিকে অনাপত্তি দিতে বলা হয়েছে। ৩০ জুন ২০২১ সালে পত্রে বিইআরসি বিদ্যুৎ বিভাগকে জানিয়েছে যে, বর্ণিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির চুক্তি নবায়নের সুযোগ নেই এবং লাইসেন্স নবায়নেরও সুযোগ নেই। তবে অনাপত্তি দিতে হলে বিইআরসিকে গণশুনানীর ভিত্তিতে এ-সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। চুক্তি সম্পাদনের প্রায় এক যুগ পরেও উক্ত নিষেধাজ্ঞা এবং বিইআরসি আইন ও বিইআরসির আপত্তি উপেক্ষা করে উক্ত চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। যদিও তা বিইআরসি আইন মতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
বিইআরসি আইনে রয়েছে পেট্রোলিয়ম পণ্যসমূহের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা বিইআরসির। অথচ বাস্তবে এলপিজির মূল্য নির্ধারণ করে ব্যবসায়িরা। পেট্রোলিয়াম পণ্যগুলির মূল্য নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। ২০০৮ সালে বিইআরসি আইন পরিবর্তন করে পেট্রোলিয়াম পণ্যের মূল্য নির্ধারন ক্ষমতা জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। বিইআরসির স্থলে নিজের হাতে নেয়ার জন্য তৎপর দেখা যায় তাদের। ভোক্তাদের প্রতিবাদের মুখে সে তৎপরতা থেমে যায়। পরবর্তিতে ব্যবসায়ীরা এলপিজি এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ অন্যসব পেট্রোলিয়াম পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করতে থাকে। আমদানী বাজারের জ্বালানী তেলের দরপতন সমন্বয় সুবিধা পরিবহন ও বিদ্যুৎ ব্যবসায়ীরা পেলেও ভোক্তা পায়নি। লুন্ঠনমূলক মূল্যে ভোক্তাকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সেবা ক্রয় করতে হচ্ছে। ২০২০ সালে উচ্চ আদালতের নির্দেশে বিইআরসি এলপিজির মূল্য নির্ধারণ করে। ব্যবসায়ীরা সে মূল্য কার্যকর করেনি। তাই কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রথমে বিইআরসি ও জ্বালানী বিভাগে এবং পরে উচ্চ আদালতে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ নিষ্পত্তি না করে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বিইআরসি একদিকে এলপিজি’র মূল্যবৃদ্ধির কার্যক্রম শুরু করেছে এবং অন্যদিকে জ্বালানী বিভাগ আবারও উক্ত আইন পরিবর্তনে তৎপর হয়েছে।
বর্তমানে জ্বালানী সংকট প্রকট। ভুর্তুকি ও মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণহীন। সেই সাথে এ-খাতে সুশাসন সংকট চরমে। আলোচ্য পরিস্থিতিতে জ্বালানী অধিকার বিপন্ন। ভোক্তারা উদ্বিগ্ন। এমন সন্ধিক্ষণে আপনাদেরকে এই সভায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য। ভোক্তাদের উল্লিখিত উদ্বেগ গুলি সভায় উপস্থাপন করা হলো।
খন্দকার আবু সালেক সুফি
আন্তর্জাতিক জ্বালানি পরামর্শক
একটি স্বাধীন দেশে যেখানে দায়মুক্তি থাকে এটিকে কালো আইন বলা উচিত। পর্যায়ক্রমে এটি চালু রেখে আমাদের জ্বালানি সেক্টরে বাপেক্স এবং জিটিসিএল কে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। একটি কোম্পানি রাশিয়ান এনার্জি জায়েন্টকে বাংলাদেশ নিয়ে এসে আমাদের প্রতিটি কুপ যেখানে বাপেক্স ১০ মিলিয়ন ডলারে করার সক্ষমতা ছিল আমাদের উন্নয়ন কুপ সেই কুপ ২০ মিলিয়ন ডলারে প্রথমে ১০টি পরে ৫টি করা হয়েছে। এই অর্থটা বাপেক্সকে বহন করতে হয়েছে জিডিএফ ফান্ড থেকে যা বাপেক্সকে গ্র্যান্ট দেওয়ার কথা সেটি লোন দেওয়া হয়েছে এভাবে বাপেক্সকে পঙ্গু হয়েছে। গ্যাস সঞ্চালন কোম্পানিকে এই অ্যাক্ট এর আন্ডারে অনেকগুলি বড় বড় গ্যাস পাইপলাইন কম্প্রেসার স্টেশন উচ্চ মূল্যে করা হয়েছে কিন্তু গ্যাস সরবরাহ না থাকায় বেশিরভাগই অব্যবহৃত। এলেঙ্গা কম্প্রেসার স্টেশন সম্পূর্ণ অব্যবহৃত আছে। আশুগঞ্জ কম্প্রেসার স্টেশনে পর্যাপ্ত গ্যাস নেই। আরো একটি গ্যাস পাইপলাইন খুলনা পর্যন্ত আছে কিন্তু গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে না। এইসবের যেই উপকরণ এগুলো টেন্ডার দ্বারা ক্রয় না করে অনেক উচ্চ মূল্যে ক্রয় করা হয়েছে। একই মূল্যে একটি পাইপ লাইন মহেশখালী থেকে আনোয়ারা পর্যন্ত করা হয়েছে। এর ফলে যে আর্থিক প্রতিক্রিয়াটি হয়েছে তার জন্য জিটিসিএল পঙ্গু হয়ে গিয়েছে। আমাদের মিটার সিস্টেম বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের জন্য প্রিপেইড মিটার করার কথা ছিল কিন্তু অত্যন্ত সুক্ষভাবে সব প্রিপেইড মিটার গুলি ক্রয় করা হয়নি। যে মিটারের মূল্য ২০ থেকে ৩০ ডলার হওয়ার কথা ছিল সেই মিটার গুলি ৫০ থেকে ৭০ ডলারে ক্রয় করা হয়েছে। গ্যাসে আমাদের নিজস্ব উৎপাদন এবং অনুসন্ধান না করে ২ টিসিএফ যোগ করা হয়েছে।
কিন্তু আমরা খরচ করে ফেলেছি ১৪ টিসিএফ। এর ফলে গ্যাস সংকটের জন্য এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। এলপিজি ক্রয় করার জন্য কাতার এবং ওমানের সাথে যেই দুটি চুক্তি করা হয়েছে। সেই চুক্তিও যথেষ্ট অসচ্ছল এবং অসামঞ্জস্য এর ফলে বাংলাদেশ লাভবান হচ্ছে না। এবং এই মুহূর্তে স্পট মার্কেট থেকে যেই এলপিজি কেনা হয় গত মাসেও ৯ ডলারে কেনা হয়নি কিন্তু এখন সংকটের মধ্যে ২২ ডলারে কেনার একটি কার্যক্রম করা হচ্ছে যেটা স্পেশাল অ্যাক্ট এর আন্ডারে নেওয়া হবে। পায়রা, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে এখানেও অস্বচ্ছতা আছে। যেমন কয়লা ক্রয় করা হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া থেকে অনেক উচ্চমূল্যে এবং একচেটিয়া তাদের অ্যাডভান্টেজ দেওয়া হচ্ছে। এইসব কারণে চুক্তিটি আবার নবায়ন করা হচ্ছে টেন্ডার প্রসেস না করাই আমাদের মধ্যে অনেক গোষ্ঠী লাভবান হয়েছে কিন্তু ভোক্তাদের সহনশীল দামে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি পাওয়ার কথা তা কিন্তু হচ্ছে না। কুইক রেন্টাল গুলি ৩ থেকে ৫ বছর মেয়াদী ছিল এবং কিছু ছিল ১৫ বছর মেয়াদী। আমাদের যেই ২৫ হাজার মেগাওয়াট ক্যাপাসিটি বলা হচ্ছে কিন্তু আমাদের সর্বোচ্চ চাহিদা ১৫ হাজার মেগাওয়াটের বেশি যায়নি। তার ফলে এই অধিকাংশ কুইক রেন্টাল প্লান্ট গুলি চালু না রেখে তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ দেওয়া হচ্ছে। ফলে এর প্রভাব আমাদের বিদ্যুতের যেই ট্যারিফ তার উপরে এসে পড়েছে। এখানে প্রায় ৭ হাজার মেগাওয়াট তরল জ্বালানির পাওয়ার প্লান্ট যা ফার্নেস অয়েল এবং ডিজেল। বিশ্ববাজারে ফার্নেস অয়েল এবং ডিজেলের দাম কমে গেলে এর সুবিধা ভোক্তারা পায় না পায় হচ্ছে মালিকরা।
এলপিজিতে যেহেতু পাবলিক এবং প্রাইভেট অপারেটররা আছে এবং অ্যাক্ট এর মধ্যে বলা আছে এর মূল্য বার্ক নির্ধারণ করবে। এইটি না করে আমাদের বাজারের সক্ষমতার অনেক বেশি সংখ্যক এলপিজি অপারেটর দেওয়ার ফলে তারা তাদের সুবিধামত এলপিজির দাম নির্ধারণ করছে। আমাদের সারাদেশে জ্বালানি ব্যবহারে অসম্য রয়েছে যারা মিটার গ্রাহক তারা ৫০০ টাকা খরচ করে মাস চালাচ্ছেন যারা মিটার বিহীন গ্রাহক তাদের ৯০০ টাকা করে প্রতিমাসে খরচ চালাচ্ছে সেই সাথে প্রচুর পরিমাণে লক্ষ লক্ষ অবৈধ গ্যাস কানেকশন আছে। অথচ পুরো দেশের মানুষকে এলপিজি ব্যবহার করতে হয় দেড় হাজার থেকে ২ হাজার ডলার। এই তিনটি বিষয়কে আমি এই মুহূর্তে দেশবিরোধী বলবো এই কারণে প্রথমটির যে দায়মুক্তি হয়েছে দায়মুক্তি একটি কালো করান এটির এক্সটেনশন চলতে পারে না। আশঙ্কা করছি এর আওতায় অচিরেই বেশকিছু কন্ট্রাক্ট করা হবে পায়রা গভীর সমুদ্রে ৭0 কিলোমিটার পাইপলাইন করে উচ্চ মূল্যে এলপিজি সরবরাহ করার একটি অবাস্তব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই রকম আরো কিছু হবে রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টেও হবে ফলে আমাদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সুলভ মূল্যে সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। এত কিছু করেও আমরা যারা ভোক্তা এবং শিল্পগ্রাহক তারা বুঝতে পেরেছি যে আমরা জ্বালানি সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। বিশ্ববাজারে এলপিজি এবং এলএনজির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে আমাদের গ্যাসের উৎপাদন কমে যাচ্ছে আমরা কখনোই আমদানিনির্ভর জ্বালানির উপর দীর্ঘসময় জ্বালানি নিশ্চয়তা অর্জন করতে পারবে না।