ভোক্তাকন্ঠ ডেস্ক: ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ যাত্রীদের জীবন বাঁচাতে জরুরি ভিত্তিতে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
আহতদের ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রাষ্ট্রীয় খরচে চিকিৎসা এবং নিহতদের পরিবারকে নৌ-দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিও জানায় সংগঠনটি।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।
তিনি বলেন, ‘লক্কড়-ঝক্কড় ঝুঁকিপূর্ণ লঞ্চে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে সার্ভে সনদ ও রুট পারমিট ইস্যুর কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।’
এসময় বিআইডব্লিউটিএ’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়েরের দাবিও জানান মোজাম্মেল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘লঞ্চে মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ইঞ্জিন, বডি নিয়ে অসংখ্য লঞ্চ যাত্রীদের জীবন নিয়ে রীতিমতো খেলছে। প্রতি বছর লঞ্চের ভাড়া বাড়ানো হলেও যাত্রীসেবা ও যাত্রীদের নিরাপত্তা এখনো সেকেলে রয়ে গেছে। এতে করে নৌ-পথের যাত্রীরা প্রতিনিয়ত জীবন-মৃত্যু হাতে নিয়ে এসব লঞ্চে যাতায়াত করছে।’
এসময় এমভি অভিযান-১০-এ অগ্নিকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে নৌ-নিরাপত্তায় দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ৩টার দিকে সুগন্ধা নদীর গাবখান ধানসিঁড়ি এলাকায় ঢাকা থেকে বরগুনাগামী লঞ্চটিতে আগুন লাগে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক কামাল হোসেন ভূঁইয়া এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, লঞ্চটির ইঞ্জিন কক্ষ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, লঞ্চটি ঢাকা থেকে বরগুনা যাচ্ছিল। এতে প্রায় হাজারখানেক যাত্রী ছিলেন। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে থাকা অবস্থায় লঞ্চটিতে আগুন লাগে। পরে পার্শ্ববর্তী দিয়াকুল এলাকায় ভেড়ানো হয়।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ড তদন্তে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। কমিটিতে মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব তোফায়েল আহমেদকে আহ্বায়ক এবং উপসচিব আমিনুর রহমানকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। এই কমিটিতে বিআইডব্লিউটিএ, নৌপরিবহন অধদপ্তর, নৌপুলিশ, জেলা প্রশাসন এবং ফায়ার সার্ভিসের একজন করে প্রতিনিধিকে রাখা হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম খান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।