ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক:
ভোক্তা সাধারণকে জিম্মি করে ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বেসরকারি ভোক্তা অধিকার সংগঠন ‘কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি’ (সিসিএস)।
গতানুগতিক অভিযানের পরিবর্তে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা ও গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানানো হয়।
সোমবার (৯ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সিসিএসের নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, ঈদুল ফিতরের পর সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৩৮ টাকা বৃদ্ধির পরও বাজারে তেলের সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তদারকিতে বিভিন্ন ডিলার ও ব্যবসায়ীদের গোপনে মজুত করা তেল উদ্ধার হচ্ছে। এতে প্রমাণিত হয়, ভোজ্যতেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে ভোক্তা সাধারণকে জিম্মি করে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, তেলের মতো বিভিন্ন সময়ে নানা পণ্য নিয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও সিন্ডিকেট করে বাজার অস্থিতিশীল করা হচ্ছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সামান্য জরিমানার মতো লঘুদণ্ড দেওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করছে না। উল্টো ভোক্তাকে জিম্মি করার এই প্রবণতা তৃণমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় কৃত্রিম সংকট এখন সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে বলে দাবি করে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে পলাশ মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। নিজস্ব জোগান বাদ দিয়ে ১৮ লাখ টন তেল আমদানি করতে হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে ১৮ লাখ টনের বেশি তেল আমদানি করা হয়েছে। ফলে দেশে তেলের কোনো সংকট নেই। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তদারকির ফলে মিল থেকেও তেল সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে।
সিসিএসের নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, কিন্তু অতিরিক্ত মুনাফার লোভে ডিলার ও খুচরা পর্যায়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজার অস্থিতিশীল করেছে। একই সঙ্গে সরকারকেও বেকায়দায় ফেলেছে। ফলে এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
কিন্তু অধিদপ্তরের জেলা পর্যায়ে মাত্র একজন করে কর্মকর্তা এবং আইনে শাস্তির ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত হওয়ায় রাতদিন কাজ করে ১৬ কোটি ভোক্তাকে পর্যাপ্ত সেবা দেওয়া একেবারেই অসম্ভব।
একই সঙ্গে এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভোক্তা অধিদপ্তরের জনবল বৃদ্ধির দাবি জানান পলাশ মাহমুদ।