ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১ জারি করেছে। যা ৩১ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখ থেকে কার্যকর হয়েছে। প্রবিধানটি প্রতিপালনের খাদ্য ব্যবসায়ীদের তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) এক বিজ্ঞপ্তিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বলেছে, খাদ্য ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড প্রবিধান প্রতিপালন করার অনুরোধ করা হলো। এ আইন লঙ্ঘনে নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ এর ধারা ২৬ ও ৩২ অনুযায়ী কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড হবে।
এ প্রবিধানমালায় বর্ণিত আইনগত বাধ্যবাধকতাসমূহ:
কোনো প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে উপস্থিত মোট তেল বা চর্বিতে ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড দুই শতাংশের বেশি থাকতে পারবে না।
এছাড়া ভোজ্য তেল, আংশিক হাইড্রোজিনেটেড তেল, বনস্পতি (ডালডা) ইত্যাদি তেল বা চর্বিতে দুই শতাংশের বেশি ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড থাকতে পারবে না।
মোড়কাবদ্ধ খাদ্যের লেবেলে ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ উল্লেখ থাকতে হবে। খাদ্যে আংশিকভাবে হাইড্রোজেনেটেড তেল ব্যবহৃত হলে তারও তথ্যাদি মোড়কে উল্লেখ করতে হবে।
খাদ্যে প্রাণিজ (গরু, ছাগল ইত্যাদি) চর্বি বা উপাদান ব্যবহার করলে, প্রাণিজ উৎসজাত ট্রান্স ফ্যাটি অ্যাসিড সংক্রান্ত ল্যাবরেটরি বিশ্লেষণ সনদ প্রমাণ হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২ লাখ ৭৭ হাজারসহ বিশ্বে প্রতি বছর এক কোটি ৭৯ লাখ মানুষ হৃদরোগে মারা যান। আর তার মধ্যে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট গ্রহণের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন সয়াবিন, পামওয়েলের সঙ্গে হাইড্রোজেন দিয়ে জমাট করে বনস্পতি যা ডালডা নামে পরিচিত বানানো হয়, এ ডালডায় ২৫ থেকে ৪৫ শতাংশ ট্রান্সফ্যাট থাকে। সাধারণত খরচ কমানোর জন্য হোটেল রেস্তোরাঁগুলোতে সিঙ্গারা, সমুচা, পুরি, জিলিপি, চিকেন ফ্রাইসহ বিভিন্ন ভাজা পোড়া খাবার তৈরির সময় এসব ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের মানুষ গড়ে কী পরিমাণ ট্রান্সফ্যাট গ্রহণ করে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য না থাকলেও একটি বেসরকারি সংস্থা ঢাকার স্থানীয় বাজার থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে সংগৃহীত ১২ ধরনের বেকারি বিস্কুট নিয়ে গবেষণা করে। এসব নমুনা বিস্কুটগুলোতে ৫ শতাংশ থেকে ৩৯ শতাংশ পর্যন্ত ট্রান্স ফ্যাটের উপস্থিতি পেয়েছিল।
এদিকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূলে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর তা কার্যকরে একটি ‘টেকনিক্যাল কমিটি’ গঠন করে। ২০২৩ সালের মধ্যে এর ব্যবহার নির্মূল অর্থাৎ ২ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের জন্য গঠিত এ কমিটির কাজ সমন্বয় করছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ।