ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: বায়ু দূষণ রোধে সরকার ঘোষিত বিশেষ অভিযানে ঢাকা ও আশেপাশের পাঁচটি স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। এসব অভিযানে পরিবেশ দূষণের দায়ে প্রায় সাড়ে চার লাখ জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬টি যানবাহনকে ৮৫ হাজার টাকা ও ১০টি প্রতিষ্ঠানকে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) পরিবেশ দূষণবিরোধী অভিযান ও পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট উইং, ঢাকা মহানগর কার্যালয়, ঢাকা জেলা কার্যালয়, গাজীপুর জেলা কার্যালয় ও জেলা প্রশাসন ঢাকা এসব অভিযান চালায়। ঢাকা জেলার সাভার, মানিক মিয়া এভিনিউ, খিলক্ষেত, আফতাব নগর এবং গাজীপুর জেলার বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে এসব জরিমানা আদায় করা হয়।
এর মধ্যে মানিক মিয়া এভিনিউ, খিলক্ষেত ও আফতাব নগরে পরিচালিত অভিযান পরিদর্শন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানের অংশ হিসেবে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে ও বিআরটি মহাসড়ক নির্মাণকারী দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে মোট এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। সাভার এলাকায় যানবাহনের হর্ন বাজিয়ে শব্দ দূষণের অপরাধে চারটি যানবাহনের কাছ থেকে মোট ১১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া কালো ধোঁয়ার মাধ্যমে বায়ু দূষণের অপরাধে চারটি যানবাহনের কাছ থেকে মোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
খিলক্ষেত এলাকায় হর্ন বাজিয়ে শব্দ দূষণের অপরাধে সাতটি যানবাহনের কাছ থেকে মোট ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া নির্মাণ সামগ্রী খোলা অবস্থায় রেখে বায়ু দূষণের অপরাধে দুটি প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
আফতাব নগর এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী খোলা অবস্থায় রাখায় সাতটি প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মানিক মিয়া এভিনিউ এলাকায় কালো ধোঁয়ার মাধ্যমে বায়ু দূষণ করায় ১১টি যানবাহনকে মোট ২৯ হাজার টাকা করা হয়।
পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, বায়ু দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রতি জেলার জেলা প্রশাসকদের আহ্বান জানানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় যাতে স্ব স্ব দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে এজন্য বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে এক বিশেষ সভা আহ্বান করা হয়েছে। ওই সভায় বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
পরিবেশ উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, সমাজের সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব সচেতনভাবে পালন করলে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে আসবে। পরিবেশ যাতে দূষিত না হয় এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। শুধুমাত্র সরকারের একার পক্ষে দূষণ নিয়ন্ত্রণ দুঃসাধ্য।
পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে যা যা করা দরকার সরকার তা করবে। জনগণ যাতে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে বসবাস করতে পারে সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। সরকার জনসচেতনতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে। একইসঙ্গে সরকার বায়ু দূষণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রাখবে।