ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক: ব্রয়লার মুরগির কেজি ২৫০ টাকা কেন তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান। তিনি জানান, অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট মুরগির অযৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করছে। এ ক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়ানোর দরকার। একই সঙ্গে তিনি জানান, প্রত্যেক দোকানে মূল্য তালিকা লাগাতে হবে। অন্যথায় বাজার কমিটির বিরুদ্ধে নেওয়া হবে ব্যবস্থা।
বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের পাইকারি ও খুচরা পোল্ট্রি ব্যবসায়ীদের নিয়ে আলোচনায় এসব কথা বলেন অধিদপ্তরের ডিজি।
এর আগে কয়েকদিন বিভিন্ন পাইকারি মুরগির বাজার, মুরগির দোকানে তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করে ভোক্তা অধিদপ্তর। এসময় নানা ধরনের অনিয়ম পাওয়া যায়। এসব অনিয়মের উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিতে ব্যবসায়ীদের অধিদপ্তরের তলব করা হয়েছিলো।
এসময় মহাপরিচালক বলেন, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী সারাদেশে অযৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে বাজার অস্থিতিশীল করছে। এক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়ানোর দরকার। এছাড়া মুরগির উৎপাদন খরচ যেখানে ১৬৭ টাকা, সেখানে মুরগির (ব্রয়লার) দাম ২৫০ টাকা কেন তা বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনকে খতিয়ে দেখতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে মুরগির দাম ২৫০ টাকা নিয়ে বিশ্লেষণ করা দরকার। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে মুরগির মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করার প্রয়োজন। এ বিষয়ে সব সংস্থার সঙ্গে কথা বলবো।
আলোচনায় তিনি আরও বলেন, দোকানে অবশ্যই মূল্য তালিকা থাকতে হবে, ক্রয়-বিক্রয় রশিদ থাকতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে বাজার কমিটিকে দায়ী করে নেওয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।
এসময় দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, ক্রয়ের পাকা রসিদ বা ক্যাশ মেমো সংরক্ষণ না করা, ক্রেতাকে ক্যাশ মেমো না দেওয়া, ওজনে কম দেওয়া, আইন বাস্তবায়নকারী সংস্থা বা কর্তৃপক্ষকে অসহযোগিতা করা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়।
আলোচনায় ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারসহ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ও সহকারী পরিচালকরা, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধি, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, এনএসআইয়ের প্রতিনিধি, ডিজিএফআইয়ের প্রতিনিধি, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ ব্রয়লার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, ফিড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিনিধি, বিভিন্ন বাজার সমিতির প্রতিনিধিরা।
আরও ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি, ক্যাবের প্রতিনিধি, কাপ্তান বাজার সমিতিসহ বিভিন্ন বাজার সমিতির প্রতিনিধি, বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য পাইকারি ও খুচরা পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা।
আলোচনায় মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে মোহাম্মদপুর পাইকারি ব্রয়লার হাউসের প্রতিনিধি, মোহাম্মদপুর বাজার সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, কাজী ফার্মের প্রতিনিধিরা বলেন, ফিডের দাম বেড়ে যাওয়া, মূল্য নির্ধারণের যথাযথ নিয়ম না থাকা, ডলার সংকট, বাচ্চা উৎপাদন কমে যাওয়া ইত্যাদি কারণে পোল্ট্রি মুরগির দাম বেড়েছে।
এসময় ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, পোল্ট্রি মুরগির মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে সুপারিশসহ একটি লিখিত প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।